ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম ঋণখেলাপির তালিকা থেকে স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। ফলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার অংশগ্রহণে আর কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন।
চেম্বার আদালতে মান্নার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, সৈয়দ মামুন মাহবুব, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া ও আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান। ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম।
এর আগে, ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
গত বুধবার হাইকোর্ট ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে মান্নার করা রিট আবেদন খারিজ করেন। বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, এর ফলে মান্না আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
ওই দিন মান্নার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান। পরে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া জানান, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
এর আগে, গত ১০ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে ‘কল ব্যাক নোটিশ’ জারি করে। নোটিশে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
নোটিশটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় মান্নার ৫০ শতাংশ, নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর ২৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১০ সালে আফাকু কোল্ড স্টোরেজকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বকেয়া বেড়ে বর্তমানে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও পরিশোধে কোনো অগ্রগতি না থাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা হিসেবে নোটিশ পাঠানো হয়।
ইসলামী ব্যাংক বগুড়া বড়গোলা শাখার প্রধান তৌহিদ রেজা বলেন, ঋণখেলাপি হওয়ার পরও মাহমুদুর রহমান মান্না পরিশোধে কোনো উদ্যোগ নেননি। চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ না করায় বাধ্য হয়েই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।