ডিআইজি মিজানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
১০ জুলাই ২০১৯ ২২:৫৯
ঢাকা: দুদকের পরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক মিজানুর রহমান মিজানকে জেলগেটে একদিনের জিজ্ঞেসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের কর্মকর্তা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে সাময়িক বরখাস্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন করেন। এ বিষয়ে শুনানি করেন দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল। তার শুনানি শেষে বিচারক আগামী ১৫ জুলাই ডিআইজি মিজানুর রহমানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে আদালত এ আদেশের অনুলিপি কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ২ জুলাই জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এরপর দুইদিন পর তার ভাগ্নে এসআই মাহমুদুল হাসান একই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেন দুদক। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির অব্যাহতি দেয়ার কথা বলে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান। কিন্তু গত ২ জুন খন্দকার এনামুল বাছির মিজানুরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে মিজানুর ৪০ লাখ টাকা লেনদেনের কথা ফাঁস করে দেন। প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন এনামুল বাছিরের সঙ্গে কথোপকথনের একাধিক অডিও রেকর্ড। তবে এনামুল বাছির অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি টিমও গঠন করা হয়। দুদকের পরিচালক ও দলনেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহসহ অপর দুই সদস্যরা হলেন, দুদকের সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। এছাড়া এ অনুসন্ধানের তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে দুদকের পরিচালক নিরু শামসুন নাহার দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ১ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিজানকে হাইকোর্ট থেকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারপরের দিন শাহবাগ থানার পুলিশ মিজানকে আদালতে হাজির করেন।
২০১৮ সালের জুনয়ারিতে এক নারী ব্যাংক কর্মকর্তাকে জোর করে বিয়ে এবং সম্পর্ক গোপন রাখার অভিযোগে পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়। পরে মিজানের শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের অংশ হিসেবে ওই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় দুদক।
এদিকে, তিন কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও তিন কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে (ডিআইজি) মিজানুর রহমানসহ তার স্ত্রী, ভাই ও ভাগ্নের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিধিমালা সংশোধনের পর দুদক কার্যালয়ে করা এটিই প্রথম মামলা। এর আগে থানায় মামলা করতে হতো।
সারাবাংলা/এআই/একে