Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রূপপুরে ৩৬ কোটি টাকার গরমিল, ৫০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার সুপারিশ


১৫ জুলাই ২০১৯ ২২:৪০

ঢাকা: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্রিন সিটি আবাসন প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শেষে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুটি কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এতে পাবনার রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র অস্বাভাবিক মূল্যে ক্রয় দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমরা তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। বিভিন্ন জনের বিষয়ে সুপারিশ রয়েছে। তবে, যেহেতু এটি আদালতে জমা দেব এবং এটি সাবজুডিশ মেটার (বিচারাধীন বিষয়) তাই প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দেওয়ার আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

বিজ্ঞাপন

তবে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেদন দুটিতে রূপপুর বালিশকাণ্ডের ঘটনায় ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার টাকার গরমিল পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বাড়তি অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত আনারও সুপারিশ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গণপূর্ত বিভাগের পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলমসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করেছে তদন্ত কমিটি।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪টি ভবনে আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম সরবরাহ কাজের চুক্তি মূল্য একশ ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। অথচ মালামাল সরবরাহ করা হয়েছে ৭৭ কোটি ২২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

অর্থাৎ চুক্তি মূল্য সরবরাহ করা মালামালের প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার টাকা বেশি। এই বাড়তি পরিশোধিত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আগামী রোববার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দুটি দাখিল করা হবে।

এর আগে, গত ২ জুলাই রূপপুর গ্রিন সিটি আবাসন প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের করা দুটি কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল এবং ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্র বিশ্বস্ততার সঙ্গে (গুড ফেইথ) কেনা ও উত্তোলনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।

এ ঘটনা তদন্তে সরকারের দুটি কমিটির প্রতিবেদন দাখিল এবং প্রতিবেদন অনুযায়ী কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো, রাষ্ট্রপক্ষকে তা দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকোশলী, রাজশাহী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।

গত ২০ মে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্র ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র তোলার অস্বাভাবিক খরচ তদন্তে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন চেয়ে রিটের শুনানিও স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখেন হাইকোর্ট।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য নির্মাণাধীন গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম নিয়ে গত ১৬ মে একটি দৈনিকে ‘কেনা-তোলায় এত ঝাঁজ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে হাইকোর্টে এ নিয়ে রিট দায়ের হয়।

সারাবাংলা/এজেডকে/একে

প্রকৌশলী মাসুদুল বালিশকাণ্ড রূপপুর হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর