করোনার প্রভাবে ছাপা হচ্ছে না সুপ্রিমকোর্টের কজ-লিস্ট
১৩ মার্চ ২০২০ ০০:১৩
ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হওয়া করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ল বাংলাদেশর বিচার বিভাগের ওপর। মামলার তালিকা (কজলিস্ট) ছাপার উপাদান পিএস প্লেট আমদানি সংকটে পড়ায় রোববার (১৫ মার্চ) থেকে এই তালিকা ছাপানো যাবে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে এখন চীন থেকে ওই প্লেট আমদানি করা যাচ্ছে না। ফলে ছাপানো যাচ্ছে না কজ-লিস্ট। কবে নাগাদ চীন থেকে ওই প্লেট আমদানি করা সম্ভব হবে, সেটাও নিশ্চিত করতে বলতে পারেননি আমদানিকারকরা। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অনলাইন কজ-লিস্ট ব্যবহার করার জন্য বিচারক, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২ মার্চ ঢাকার তেজগাঁওয়ের গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসের উপপরিচালক সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, কজ-লিস্ট প্রকাশের অন্যতম উপাদান পিএস প্লেট শেষ হয়ে গিয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে আমাদানিকারকরা চীন থেকে পিএস প্লেট আমদানি করতে পারছেন না। এ অবস্থার অবসান হতে কতদিন সময় লাগবে, তা অনুমান করা যাচ্ছে না। পিএস প্লেট সরবরাহ না হলে কজ-লিস্ট মুদ্রণের কাজ চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।
এ অবস্থায় রোববার থেকে পিএস প্লেট সরবরাহ না হওয়া পর্যন্ত বিজি প্রেস হাইকোর্ট বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকা ছাপাতে পারছে না। এ সময়ে অনলাইন কজ-লিস্ট ব্যবহারের অনুরোধ করা গেল। একইসঙ্গে কজ-লিস্ট ছাপাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালককে অনুরোধ করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে সুপ্রিম কোর্টের দৈনন্দিন কার্যতালিকা প্রতিদিন কাগজে ছাপানো হয়ে আসছে। সাধারণত আগের দিন রাত ৮টার মধ্যে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ কর্মকর্তারা পরের দিনের মামলার তালিকার খসড়া পাঠিয়ে দেন বেঞ্চ ও ডিক্রি শাখায়। সংশ্লিষ্ট শাখার তত্ত্বাবধায়ক তা সংগ্রহ করে ছাপানোর জন্য পাঠিয়ে দেন বিজি প্রেসে। প্রতিদিন ভোরে প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠার কজ-লিস্ট ছাপা হয়। ওই কজ-লিস্ট সুপ্রিম কোর্ট থেকে সংগ্রহ করেন আইনজীবীরা। কজ-লিস্টে মামলার শ্রেণি অনুযাীয় নম্বর, সন, বাদী ও বিবাদীর নাম এবং সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারপতিদের নাম ও এখতিয়ারের বিষয়টি উল্লেখ থাকে।
তবে, কাগজে ছাপার পাশাপাশি অনলাইনেও কজ-লিস্ট প্রকাশ হয়। এবার ছাপা না হওয়ায় সেই অনলাইন কজ-লিস্টের ওপরই নির্ভর করতে হবে সংশ্লিষ্টদের।