ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, টেকসই বন ও জীবিকা (এসইউএফএএল) প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে বন পুনরুদ্ধার, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বননির্ভর জনগোষ্ঠীর জীবিকা উন্নয়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। একই সঙ্গে কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে।
তিনি জানান, এরই মধ্যে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৬০ হেক্টর বনভূমি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, যার ফলে পাহাড়, শালবন ও উপকূলীয় অঞ্চলে দেশীয় উদ্ভিদের বৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার (২১ মে) বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার অফিস কক্ষে বিশ্বব্যাংকের টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহায়তা মিশনের সমাপনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বন অধিদফতরে ড্যাশবোর্ড ব্যবহার করে ‘সাইট-সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ’ টুল সফলভাবে চালু করা হয়েছে, যা তথ্যভিত্তিক বন পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করছে। এ ছাড়া ১ হাজার উদ্ভিদ প্রজাতির রেড লিস্ট মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫টি সংরক্ষিত অঞ্চলে আক্রমণাত্মক বিদেশি উদ্ভিদ প্রজাতির ব্যবস্থাপনার কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় সংরক্ষণ কৌশল ও Sharks and Rays-এর জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ, এবং চারটি শার্ক ও রে প্রজাতির জন্য Non-Detriment Findings (NDF) প্রস্তুতকরণ wildlife trade ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘৬১৫টি যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (সিএফএম) প্রতিষ্ঠানে ‘কমিউনিটি অপারেশনস ম্যানুয়াল (সিওএম)’ কার্যকরভাবে চালু করা হয়েছে, যা ৪১ হাজারের অধিক বননির্ভর মানুষকে সরাসরি উপকৃত করেছে। প্রতিটি সিএফএম উপকমিটিতে নারীর ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে, যা বন শাসনে লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেছে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে সব ধরনের কার্যক্রম; বনায়ন, অবকাঠামো নির্মাণ ও কমিউনিটিভিত্তিক উদ্যোগে পরিবেশ ও সামাজিক সুরক্ষা নীতিমালা সংযোজন করা হয়েছে এবং ই-জিপি (ই-জিপি) পদ্ধতিতে সকল পণ্য ও কাজের ক্রয় সম্পন্ন হওয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে।’
রিজওয়ানা হাসান বিশ্বব্যাংকের ধারাবাহিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল বন ব্যবস্থাপনায় মন্ত্রণালয় তার অঙ্গীকার দৃঢ়ভাবে বজায় রাখবে।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) জনাব খায়রুল হাসান, যুগ্ম সচিব মিজ লুবনা ইয়াসমিন, প্রধান বন সংরক্ষক জনাব আমির হোসেন চৌধুরী, SUFAL প্রকল্প পরিচালক জনাব গোবিন্দ রায় এবং বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি ক্রিসটিয়ান আলবার্ট পিটার, আনা সি. ও’ডোনেল, ড. ইস্তিয়াক সোবহান, মার্গারেট আরমল্ড, বুশরা নিশাত ও জিহা কওন।