ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তঃসীমান্ত জলপথ এবং আন্তর্জাতিক হ্রদ সুরক্ষা ও ব্যবহার সংক্রান্ত কনভেনশনে (জাতিসংঘের পানি কনভেনশন) যোগ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতিসংঘ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে (২৩ জুন) সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ এই কনভেনশনে যোগ দেয়।
এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গত ২০১২ সাল থেকে কনভেনশনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে আসছে বাংলাদেশ। সবশেষে গত ২০২৪ সালের অক্টোবরে স্লোভেনিয়ায় কনভেনশনের পক্ষগুলোর ১০ম সভায় অংশগ্রহণ করে।
বর্তমানে ৫৬টি সদস্য দেশ রয়েছে, এই কনভেনশনে আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার মধ্যে পক্ষ রয়েছে এবং বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশ যোগদানের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ একটি নদীবেষ্টিত এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ, যা একটি জটিল ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত। আন্তঃসীমান্ত জল ব্যবস্থাপনা দেশটির শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে চীন, নেপাল, ভুটান, ভারতজুড়ে বিস্তৃত বিশাল গঙ্গা (পদ্মা)-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদী ব্যবস্থা। এটি বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জটিল ব-দ্বীপগুলোর মধ্যে একটি।
এই কারণেই বাংলাদেশ জাতীয় ও আন্তঃসীমান্ত পর্যায়ে টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে কার্যকর সহযোগিতা এবং সংলাপের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা বোঝে। তীব্র জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব গ্রীষ্মকালে খরা এবং বর্ষাকালে বন্যার তীব্রতা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান অপ্রত্যাশিত জলপ্রবাহের কারণে এই প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশের প্রায় ৬০ শতাংশ জনসংখ্যা উচ্চ বন্যার ঝুঁকির সম্মুখীন, যা নেদারল্যান্ডস ছাড়া বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। প্রায় ৪৫ শতাংশ নদীতীরে উচ্চ বন্যার ঝুঁকির সম্মুখীন, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ অনুপাত। প্রতি বছর গড়ে বাংলাদেশের ২০-২৫ শতাংশ ভূমি বন্যায় ডুবে যায় এবং যখন চরম বন্যা দেখা দেয় তখন দেশের ৫৫-৬০ শতাংশ ভূমি ডুবে যায়। ৬ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এখনও নিরাপদে পরিচালিত স্যানিটেশন ব্যবস্থার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।