Saturday 26 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শুধু অভিযোজন নয়, দরকার বিশ্বব্যাপী নির্গমন হ্রাস: পরিবেশ উপদেষ্টা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৩

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ঢাকা: উদ্ভাবনী অভিযোজন পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি হলেও, তা বিশ্বব্যাপী নির্গমন হ্রাসের বিকল্প হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

শনিবার (২৬ জুলাই) ব্র্যাক সিডিএম, সাভারে অনুষ্ঠিত ফ্রুগাল ইনোভেশন ফোরাম ২০২৫-এ ‘Policy Perspective on Climate Adaptation in Agriculture, Food Security, and Livelihoods’ শীর্ষক সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন।

এ সময় নোয়াখালী ও ফেনীসহ উপকূলীয় অঞ্চলের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জটিল নদীপ্রবাহ এবং জোয়ার-ভাটার প্রভাবে পানির উচ্চতা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা স্থানীয় বন্যা প্রতিরোধব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন , “অভিযোজনেরও সীমা আছে। প্রশ্ন হলো, আমরা কতটা অভিযোজন করতে পারি, ধ্বংসের আগে?”

উপদেষ্টা বিশ্বব্যাপী প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান মানে হওয়া উচিত নদী, বন আর খাল রক্ষা; শুধু কার্বন অফসেট হিসাব করার জন্য গাছ গোনা নয়, যখন নির্গমন কমানোর আন্তরিক প্রতিশ্রুতি অনুপস্থিত।’

তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্যকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার না করে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোই এখন সময়ের দাবি। কৃষিখাতে দুর্বলতার প্রসঙ্গ তুলে তিনি তামাক ও ক্যাসাভা চাষ সম্প্রসারণের মতো ক্ষতিকর প্রবণতা বন্ধ করে জনগণের জ্ঞান ও অংশগ্রহণভিত্তিক পুনর্জাগরণমূলক কৃষি ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেন। শুধু খাদ্যের পরিমাণ নয়, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাটাই হওয়া উচিত আমাদের লক্ষ্য।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অভিযোজনভিত্তিক অর্থায়নের বণ্টনে তৃণমূল, সুশীল সমাজ ও স্থানীয় উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলোকে প্রাধান্য দিতে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘নীতিনির্ধারক ও জনগণের মধ্যে দুইমুখী যোগাযোগ দরকার।’ তিনি অভিযোজন কর্মকাণ্ডে স্থানীয় সরকার ও জনগণকে নেতৃত্বের আসনে বসানোর আহ্বান জানান।

তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে সংস্কার আনা ও সমন্বয় এবং অর্থবণ্টনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনতে নতুন প্ল্যাটফর্ম যেমন বিসিডিপি চালুর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। তিনি গাছ সংরক্ষণ আইন, বিদ্যালয়ভিত্তিক রোপণ কর্মসূচি ও ভূমি সংরক্ষণ উদ্যোগের অগ্রগতি সম্পর্কেও আলোকপাত করেন এবং প্রকৃতিকে সম্মান জানাতে মনোভাবগত পরিবর্তনের ওপর জোর দেন।

বক্তব্য শেষে উপদেষ্টা সতর্ক করে বলেন, ‘উন্নয়নের ধরণ পরিবর্তন করতে হবে। জলবায়ু সহনশীলতা শুধু টিকে থাকার বিষয় নয়, এটি আমাদের মূল্যবোধ পুনর্বিবেচনার আহ্বান।’

অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল হান্নান, ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর কে এ এম মোর্শেদ এবং দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এফএন/এমপি

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর