৩২ ধারা নিয়ে মত দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন সাংবাদিক নেতারা
৪ জুলাই ২০১৮ ২২:২৪
||স্টাফ করেসপন্ডেন্ট||
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলের ওপর এবার সাংবাদিক নেতারা মত দেবেন। আগামী ১৬ জুলাই এই নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে মত দেওয়ার সুযোগ পাবেন তারা। তার আগে বুধবার (৪ জুলাই) সম্পাদক পরিষদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্স (অ্যাক্টো)’র প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
এসময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলের খসড়া কপি সাংবাদিক নেতাদের হাতে দেয় মন্ত্রণালয়। প্রায় দুই সপ্তাহ পর ওই বিলের খসড়ার ওপর নিজেদের মত তুলে ধরবেন সাংবাদিকরা।
তিন ফোরামের সাংবাদিক নেতারাই এ সময় বলেছেন, তারা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করবেন, বিচার বিশ্লেষণ করবেন এবং তার ভিত্তিতেই ১৬ জুলাই মতামত দেবেন।
বুধবার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকটি হয়। এই কমিটিই সংসদের পাশের আগে বিলটির ওপর কাজ করছে।
বৈঠকের পর ইমরান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সাংবাদিক নেতা ও সম্পাদকদের সঙ্গে আরেক দফা বসবো এবং এ সংক্রান্ত তাদের যে কোনও পরিবর্তন পরিবর্ধনের পরামর্শ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে।
বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এরই মধ্যে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিছু প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনেছি।
এর আগে মতামত নেওয়ার প্রথম দফা বৈঠক শেষে গত ২১ মে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রস্তাবিত আইন নিয়ে সাংবাদিকদের যে মতামত রয়েছে তা গুরুত্বের সাথে নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদন করে।
এই খসড়ায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিল করার কথা বলা হলেও ৫৭ ধারার বিষয়বস্তুগুলো চারটি ধারায় ভাগ করে রাখা হয়। আলাদা আলাদা শাস্তির বিধানও রয়েছে তাতে।
এ নিয়ে ওঠে বড় ধরনের বিতর্ক। নতুন আইনের ৩২ ধারা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আপত্তি ওঠে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার অতিগোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল যন্ত্র, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন, তাহলে সেই কাজ হবে কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে। এছাড়াও কেউ যদি এই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা বারবার করেন, তাহলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে বলেও খসড়ায় রয়েছে।
সাংবাদিক মহল থেকেই এই ধারার প্রতিবাদ ওঠে সবচেয়ে বেশি। এবার খসড়া চূড়ান্ত করার আগে সাংবাদিকরা তাদের মত রাখার সুযোগ পাচ্ছেন, একে ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সারাবাংলা/এমএম