ঢাকা: জুলাই সদন-২০২৫ এর পূর্ণাঙ্গ খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে এই খসড়া দেশের সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এই খসড়ার কোনো শব্দ, বাক্য গঠন বা কোনো বিষয়ে মন্তব্য থাকলে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিশনে জমা দেওয়া অনুরোধ করা হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে জুলাই সনদে যা আছে তা হুবহু তুলে ধরা হলো:
৫২। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ: বিদ্যমান সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ সংশোধনপূর্বক এরূপ বিধান করা হবে যে,
(ক) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত সংখ্যক নির্বাচন কমিশনারগণের সমন্বয়ে বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে। আইনের দ্বারা নিম্নরূপে গঠিত একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করা হবে:
(১) জাতীয় সংসদের স্পিকার (যিনি এই বাছাই/selection কমিটির প্রধান হবেন),
(২) ডেপুটি স্পিকার (যিনি বিরোধী দল হতে নির্বাচিত হবেন),
(৩) প্রধানমন্ত্রী,
(৪) বিরোধী দলের নেতা, এবং
(৫) প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি।
এই বাছাই বা selection কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ করার উদ্দেশ্যে বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও অন্যান্য কমিশনারগণের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের দ্বারা (যেখানে নির্বাচন কমিশনার হওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতা, প্রার্থী অনুসন্ধানের পদ্ধতি, প্রাধিকার ও কর্মপদ্ধতির উল্লেখ থাকবে) নির্ধারিত পদ্ধতিতে ইচ্ছাপত্র ও প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি আহ্বান করাসহ কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে উপযুক্ত প্রার্থীর অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
(খ) অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের জীবনবৃত্তান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে সর্বসম্মতিক্রমে তাদের মধ্য হতে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্ধারিত প্রতিটি পদের বিপরীতে একজন করে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণ করবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাদেরকে কার্যভার গ্রহণের তারিখ হতে পরবর্তী ৫ (পাঁচ) বছরের জন্য নিয়োগ দিবে।
(গ) স্পিকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংসদ সচিবালয় এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে।
(ঘ) (বিদ্যমান সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের উপানুচ্ছেদ ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ অপরিবর্তিত থাকবে)।
(ঙ) ১১৮(৫) অনুচ্ছেদ এর সাথে এরূপ যুক্ত হবে: এতদ্ব্যতীত জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারগণের জবাবদিহিতার জন্য আইন প্রণয়ন ও আচরণ বিধি প্রণীত হবে। [৩২টি দল ও জোট একমত]
৫৩। নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ:
(ক) নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে আশু ব্যবস্থা হিসেবে—ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় যথাযথ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে নিয়ে একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন (যদি ইতোমধ্যে তা গঠিত হয়ে থাকে তবে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করে) এবং সেই কমিটির পরামর্শক্রমে সংসদীয় এলাকা নির্ধারণ করা হবে।
(খ) দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে প্রতি আদমশুমারি বা অনধিক ১০ বছর পরে সংসদীয় নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণের জন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ এর দফা ১ এর (গ) এর শেষে বর্ণিত ‘এবং’ শব্দটির পর আইনের দ্বারা নির্ধারিত একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠনের বিধান যুক্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১ (সর্বশেষ ২০২৫ সালে সংশোধিত) এর ধারা ৮(৩) এর সঙ্গে যুক্ত করে উক্ত কমিটির গঠন ও কার্যপরিধি নির্ধারণ করা হবে। [২৯টি দল ও জোট একমত]
৫৪। স্থানীয় সরকার নির্বাচন : স্থানীয় সরকারের নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।