Tuesday 30 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সফর শেষে ইইউর প্রতিবেদন
রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতি দেখাতে হবে

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০২ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৫২

ঢাকা: সারাবিশ্বে যখন গণতন্ত্র হোঁচট খাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে হাঁটছে। সরকার ইতোমধ্যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতি দেখাতে হবে।

গত ১৬ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার উপকমিটির পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, বেসরকারি সংস্থা, নাগরিক সমাজ, শ্রমিক সংগঠন এবং মাঠপর্যায়ের বহুপক্ষীয় সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরও পরিদর্শন করেন। সফর শেষে দেওয়া প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করে ইইউ।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সের স্ত্রাসবুর্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সফরকারী দলের প্রধান মুনির সাতোরি।

মুনির সাতোরি বলেন, সফরের দুটি উদ্দেশ্য ছিল—এক, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা ও গণতান্ত্রিক উত্তরণে মানবাধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরা; দুই, রোহিঙ্গা সংকটকে আবারও ইইউর রাজনৈতিক এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা।

বাংলাদেশের সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, তবে ইইউ এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রস্তাব করেছে।

প্রতিনিধিদলের সদস্য ইজাবেল উইসেলার-লিমা বলেন, যখন বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র অবনতির পথে, তখন বাংলাদেশ পথ পরিবর্তন করে দেখিয়েছে গণতন্ত্রের পথে হাঁটা সম্ভব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামনে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে এবং অন্তর্বর্তী সরকার সে জন্য চেষ্টা করছে।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ইজাবেল বলেন, কক্সবাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থীশিবির। ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজা সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রায় বিস্মৃত হচ্ছে, যা ভুলে যাওয়া যাবে না। মিয়ানমার দায়িত্ব নিচ্ছে না, আর বাংলাদেশও বিশাল জনসংখ্যার কারণে রোহিঙ্গাদের আত্মীকরণ করতে পারছে না।

আরেক সদস্য আরকাদিউজ মুলারজিক বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে সবচেয়ে বেশি মানবিক অনুদান আসে ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে, আগে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে ছিল। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা খুবই সীমিত, যা হতাশাজনক। দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেওয়া উচিত। বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গেও আলোচনার পরামর্শ দেন তিনি।

প্রতিনিধিদল সদস্য ক্যাটারিনা ভিয়েরা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিবর্তন সত্যিকারের অগ্রগতির সুযোগ। নাগরিক সমাজ, ছাত্র-যুব আন্দোলনও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছে, যদিও ধর্মীয়, লিঙ্গ ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু এবং নারীদের অংশগ্রহণ এখনো সীমিত।

আরকাদিউজ আরও বলেন, সংস্কারে যারা কাজ করছেন, তাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইইউ গঠনমূলক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বিশ্ব যখন গণতন্ত্র থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশকে ঘিরে আমাদের আশাবাদী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেখাতে হবে।

সারাবাংলা/একে/এমপি

অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র গণতান্ত্রিক উত্তরণ রাজনৈতিক দল সংস্কার

বিজ্ঞাপন

বাম জোটের নতুন সমন্বয়ক বজলুর রশীদ
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৫৮

আরো

সম্পর্কিত খবর