Tuesday 21 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাছ রক্ষায় মা মাছ ধরা বন্ধের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:০৪ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৫৪

মা মাছ ধরা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

ঢাকা: মাছ রক্ষার স্বার্থে মা মাছ ধরা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নদী ও সাগরে জেলেরা যে মাছ ধরে তা প্রাকৃতিক। এসব মাছ আমরা যদি এখনই রক্ষা না করি, তাহলে ভবিষ্যতে মাছের জোগান পাওয়া কঠিন হবে। তাই নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা বন্ধে আইন মেনে চলতে হবে। আইন মানলে প্রকৃত অর্থে লাভবান হবেন জেলেরা।’

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ১২তম জাতীয় সম্মেলন-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

মৎস্যজীবীদের উদ্দেশে ফরিদা আখতার বলেন, ‘আপনারাই এই দেশের মানুষকে মাছ খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন। আপনারা ক্ষুদ্র নন, বরং দেশের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী। আমরা শুধু ভাত খাই না—মাছ, শাক, তরকারিও খাই। আপনারা যদি মাছ না ধরেন, আমরা কেউই মাছ খেতে পারব না। আপনারা কঠোর পরিশ্রম করে সবার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন—এটিকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ভারত যাতে আমাদের সীমানায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে। নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের সহায়তা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিজিএফের চালের পরিমাণ বাড়াতে খাদ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারের দায়িত্বে থাকাকালীন আমি জেলেদের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যাব।’

তিনি আরও জানান, জেলেদের জন্য আগামীতে অন্তত ৫০ কেজি চাল বরাদ্দের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। পাশাপাশি ভিজিএফের সঙ্গে আর্থিক সহায়তা যুক্ত করা যায় কি না, সে বিষয়েও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

সম্মেলনে বক্তারা মৎস্যজীবীদের ন্যায্য অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

  • ২০১৩ সালের পরিপত্র বাতিল করে ২০০৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল,

  • ত্রাণ বিতরণে মৎস্যজীবী প্রতিনিধির স্বাক্ষর নিশ্চিত করা,

  • মৎস্যজীবীদের নামে একটি বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠা,

  • ভিজিএফ সহায়তা ৪০ কেজির পরিবর্তে ৬০ কেজি চাল ও নগদ দুই হাজার টাকা বরাদ্দ,

  • নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে জেলে মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা,

  • কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের অভিযানে মৎস্যজীবী সমিতির মনোনীত মাঝিকে অন্তর্ভুক্ত করা।

বক্তারা বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়িত হলে জেলে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নত হবে এবং তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল খলিল পণ্ডিতের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক ড. মো. মোতালেব হোসেন, বিজিবি ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম. হেলাল উদ্দিন, বরিশাল জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোসাদেক হোসেন স্বপন, সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেম হোসেন, জেলে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল মীর ও সদস্য তাছলিমা বেগম।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সদস্যরা সম্মেলনে অংশ নেন।