ঢাকা: সাপের কামড়ের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা সদরের অন্তত দুটি ফার্মেসিতে সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে বলা হয়েছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরন্নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এক প্রতিবেদনে জানায়, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট হাইকোর্ট উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছিল। স্বাস্থ্যসচিব, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জনস্বার্থে দায়ের করা ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি হয় ১৮ আগস্ট। রিটটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরন্নবী। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট ইসমাঈল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাপের কামড়ে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৬১০ জন দংশনের শিকার হয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ভাইপারিড গ্রুপের বিষধর সাপ ‘রাসেলস ভাইপার’ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এই সাপ ২৭টি জেলায় শনাক্ত হয়েছে।
২০২২ সালের জাতীয় জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হন এবং প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. রোবেদ আমিন বলেন, “বিষধর সাপ দংশনের একমাত্র স্বীকৃত চিকিৎসা হলো অ্যান্টিভেনম। বর্তমানে বাংলাদেশে এটি তৈরি হয় না। ভারতে প্রস্তুত চার প্রজাতির প্রধান বিষধর সাপের বিরুদ্ধে অ্যান্টিভেনম সংগ্রহ করে সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়।”
তিনি আরও জানান, দেশে অ্যান্টিভেনম ক্রয়, বিতরণ ও ব্যবহারের নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকলেও এর প্রয়োগে সুফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে সাপে কাটা রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা পাওয়া সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা সাপের দংশনে মৃত্যুর হার কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।