Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলাদেশ রোল মডেল’, মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান


১৮ মার্চ ২০১৯ ১৮:৩৭

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদন দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলেনে এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন অভিযোগ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক ওই প্রতিবেদন তারা নিজেরা তদন্ত করে বা মাঠে নেমে করেননি। তারা এটি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করেছে। এসব বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের আগে তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে তদন্ত বা তথ্য সংগ্রহ করা উচিত ছিল।

বাংলাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য, বাংলাদেশের জন্য নয়। কেননা বাংলাদেশে যে ধরনের মানবাধিকার চর্চা হয়, তা গোটা বিশ্বের জন্য রোল মডেল।

যুক্তেরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম সরকারের নিয়ন্ত্রণে। এটি একেবারেই সত্য নয় বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি পুরোপুরি মিথ্যা। উল্টো যুক্তরাষ্ট্রই তাদের বেসরকারি গণমাধ্যমে সরকারের পক্ষের খবর ছাপাতে বা প্রচারে বাধ্য করে।

ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশির (চেক পোস্ট) সমালোচনা কর হয়েছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যেতে যে নিরাপত্তা চৌকির মুখোমুখি হতে হয়, তা যারা এখনও মোকাবিলা করেননি তারা বুঝবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যাওয়ার সময় চেক পোস্টের নিরাপত্তাকর্মীরা তল্লাশি করে কিছুই নিতে দেন না। অথচ বাংলাদেশের চেক পোস্ট কিন্তু এমন কিছুই নয়। তাই প্রতিবেদনের এই বিষয়টিও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই বেশি প্রযোজ্য।

প্রতিবেদনটি ‘অবজেকটিভ’ হওয়া উচিত ছিল মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া তথ্যও ঠিক নয়। বাংলাদেশের  নির্বাচন যথেষ্ট ভালো ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়েছে। বরং যুক্তরাষ্ট্রেই তা হয় না। যুক্তরাষ্ট্রে ভোট কারচুপির জন্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা কমানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেখানে মাত্র শতকরা ২৬ ভাগ মানুষ ভোট দেয়। আমাদের দেশে এখনও শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ ভোট দেয়। গণতান্ত্রিক চর্চা বাংলাদশে যেভাবে হয়, যুক্তরাষ্ট্রে সেভাবে নেই। বরং এই বিষয়টিও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

তিনি আরও বলেন, ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— বাংলাদেশে ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর দমন-নিপীড়ন চালানো হয় এবং তাদেরকে আটক রাখা হয়। এমন তথ্য মোটেই ঠিক না। বাংলাদেশ সরকার সজ্ঞানে কাউকে নির্যাতন করে না। বাংলাদেশ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তবে দুষ্ট লোককে অন্তরীণ করে সবার মঙ্গলের স্বার্থে।

গত ১৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপি চেযারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সংবাদ মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সরকারি বাধা, পোশাককর্মীদের ট্রেড ইউনিয়ন করতে না দেওয়া, গুম-খুনসহ একাধিক বিষয় উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।

সারাবাংলা/জেআইএল/জেডএফ

বাংলাদেশের প্রত্যাখ্যান মানবাধিকার প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্র


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর