তৃণমূলকে ঢেলে সাজিয়ে আওয়ামী লীগকে আরও মজবুত করা হবে: শেখ হাসিনা
১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:৫২
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে ঢেলে সাজানো হবে। সাংগঠনিকভাবে দলকে আরও মজবুত করে গড়ে তোলা হবে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যৌথসভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী বছর থেকেমুজিববর্ষ উদযাপনে জাতীয় ও দলীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হবে। উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা একসঙ্গে বসেছি। পাশাপাশি আরও একটি কাজ করতে চাই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কার্যকরী সংসদের সমন্বয়ে আট বিভাগে আটটি কমিটি গঠন করেছি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, ‘এই কমিটির দায়িত্ব থাকবে সংগঠনকে একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে ঢেলে সাজানো। কোথায় কমিটি আছে না আছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগকে মজবুত করে গড়ে তোলার দায়িত্বে থাকবে ‘সাংগঠনিক কমিটি’।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনায় গেলে অনেক সময় সরকারের জনপ্রিয়তা কমে যায়। সরকার ধীরে ধীরে মানুষের কাছ থেকে হারিয়ে যায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছি।’
ঐতিহাসিক মুজিবনগর সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা যুদ্ধবিধস্ত স্বাধীন দেশকে গড়ে তুলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে যখন জাতির পিতা যাত্রা শুরু করেন, ঠিক সেই ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটে এবং জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর ২৯টি বছর। প্রথমে ২১ বছর, এরপর আবার ৭ বছর। এই জাতির জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। কাঙ্ক্ষিত কোনো অগ্রগতি দেশের মানুষের জীবনে হয়নি। কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করেছে, তখনই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে ক্ষুধামুক্ত দেশ, দারিদ্র্যমুক্ত হওয়ার পথে। প্রায় ৪০ ভাগ থেকে ২১ ভাগে দারিদ্র্যের হার নামিয়ে এনেছি। উন্নয়নের ছোঁয়া গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত হয়েছে। আজকে গ্রামের মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হচ্ছে এবং তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়ছে। যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, ‘এবারে যে নির্বাচন হয়ে গেল, সেই নির্বাচনের দিকে তাকান আপনারা দেখবেন, সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। যা অতীতে কখনও দেখা যায়নি।’
‘অপরদিকে আমরা যদি দেখি বিএনপি-জামায়াতের অবস্থা। মিলিটারি ডিটেকটর অবৈধ ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় গিয়ে এ সব দল গঠন করেছে। ৩০০ আসনে তারা ৬৯২ বা ৬৯৪টার মতো নমিনেশন দিয়েছে। তারা মনে করেছিল, একটা যেন ব্যবসা। সিট বিক্রি করে কিছু পয়সা কামাই করে নিলেও ইলেকশনের দিকে তাকে খুব একটা নজর ছিল না’ বলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ সভা পরিচালনা করেন।
সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্যদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এ কে এম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, এস এম কামাল হোসেন, আমিরুল আলম মিলন, মির্জা আজম, এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, ইকবাল হোসেন অপু, আনোয়ার হোসেন, মারফা আক্তার পপিসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে