Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুন্দরবন বিপন্ন ঐতিহ্য নয়, বাংলাদেশের প্রতি খুশি ইউনেস্কোর কমিটি


৪ জুলাই ২০১৯ ২৩:২৪

ঢাকা: বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শন সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐহিত্য কমিটি। আজারবাইজানের বাকুতে কমিটির ৪৩তম সভায় ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্যারিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এ তথ্য জানানো হয়।

এতে জানানো হয়, বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এ বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য বাকুতে শুনানির আয়োজন করা হয়। তবে ২১ সদস্য বিশিষ্ট বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটিতে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত হয়।

শুনানিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ওই ব্যাখ্যায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি।

সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ, বনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচলসহ বিভিন্ন কারণে সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে দীর্ঘদিন ধরেই এমন অভিযোগ জানিয়ে আসছিল জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত সংস্থাটি। এ কারণে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় রাখতে চেয়েছিল। গত কয়েকদিন ধরেই আশঙ্কা ছিল সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে। কিন্তু সুন্দরবন বিষয়ে সেই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশ উতরে গেল।

প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ব্যাখ্যায় সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরা হয়। ২১ সদস্য বিশিষ্ট বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটিতে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানার পর তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, কিউবা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং চীন সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার নতুন সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করে। কিউবা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং চীন ছাড়াও আজারবাইজান, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, তিউনিসিয়া, তানজানিয়া, বুরকিনাফাসো, উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে ও পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে ভারতসহ ১৫টি সদস্য রাষ্ট্র সরাসরি এ সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দেয়।

কমিটিতে সুন্দরবন সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রশংসিত হয় বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এ কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানাবে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে হালনাগাদ তথ্য সংবলিত প্রতিবেদন জমা দেবে।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানান। বর্তমান কমিটির উন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় গৃহীত এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে উৎসাহিত করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তৌফিক-ইলাহী-চৌধুরী বলেন, ‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন এলাকার বাইরে অবস্থিত। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে ৫ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সিদ্ধান্ত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পূরণের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করবে।’

একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুন্দরবন বাংলাদেশের গর্ব এবং বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ে সচেতন একটি দেশ।’

বিজ্ঞাপন

ইউনেস্কোর সভা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ৩০ জুন থেকে শুরু হয়ে আগামী ১০ জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

সারাবাংলা/জেআইএল/একে

আরও পড়ুন

সুন্দরবন এলাকায় শিল্পস্থাপনে ৫ প্রতিষ্ঠানকে ছাড়পত্র
তিন বছরে সুন্দরবনে বাঘ বেড়েছে ৮টি
সুন্দরবন এখন ধ্বংসের মুখে: সুলতানা কামাল
সুন্দরবনকে কালো তালিকা থেকে বাঁচাতে প্যারিসে দৌড়-ঝাঁপ
সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকাভুক্তির প্রস্তাবে উদ্বেগ টিআইবির

ইউনেস্কো জাতিসংঘ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর