Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোহিঙ্গা ইস্যুতে শনিবার আসছে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল


২৬ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৫

রোহিঙ্গা ক্যাম্প: ফাইল ছবি

ঢাকা: কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আগামীকাল শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে দুইদিনের কক্সকাজার সফরে আসছে নেপিডো’র উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় এসেই কক্সবাজার যাবেন।

নেপিডো’র একটি কূটনৈতিক সূত্র সারাবাংলা’কে জানিয়েছে, কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিকরা যাতে স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফেরত যায় সেই বিষয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থা গড়তেই মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলটি কক্সবাজার (২৭ ও ২৮ জুলাই) সফর করবেন।

দ্রুততম সময়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান

এদিকে, একই ইস্যুতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ টি দেশর আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত মানবিক সহায়তা কেন্দ্রের (আহা সেন্টার) একটি প্রতিনিধি দল আগামী ২৭ জুলাই (শনিবার) কক্সবাজার সফর করবেন। আসিয়ানের এই সংস্থাটি রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কাজ করছে। তবে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আসিয়ানের এই সংস্থাটির করা একটি গোপনীয় প্রতিবেদন গত মাসে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস হয়। যেখানে দেখা গেছে, আসিয়ানের এই সংস্থাটি রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনেক বিতকির্ত বা ভুল তথ্য উপস্থাপন করছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সারাবাংলা’কে জানান, মিয়ানমারের সৃষ্টি করা রোহিঙ্গা সঙ্কট কাটাতে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজার সফর করবেন। একই সময়ে আসিয়ানের সংস্থা আহা সেন্টারের একটি প্রতিনিধি দলও কক্সবাজার সফর করবেন। দুইটি দলই ঢাকায় এসে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে সফরের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বৈঠক করবেন।

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে গত ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে গত ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়।

রোহিঙ্গ সঙ্কট সমাধানে গত ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নেপিডোর সঙ্গে সই করা চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, ‘৯ অক্টোবর ২০১৬ এবং ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালের পর যে সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদেরকে ফেরত নিবে মিয়ানমার। চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রায় দেড় বছর পার হলেও প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো একাধিক অজুহাতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে নেপিডো।

জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছে যে প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়।

গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কুয়েত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পুরো বিশ্ব।

সারাবাংলা/জেআইএল/ইএইচটি

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ঢাকার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি নেপিডো
আপত্তি ওঠা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে খুব শিগগিরই ঢাকায় বৈঠক
রোহিঙ্গায় আস্থা গড়তে ২৫ জুলাই আসছে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল

টপ নিউজ নেপিডো মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর