মানব পাচারের ঘটনার কার্যকর বিচার প্রক্রিয়া চায় যুক্তরাষ্ট্র
৮ আগস্ট ২০১৯ ২০:২১
ঢাকা: মানব পাচারের ঘটনার কার্যকর বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মানব পাচার পরিবীক্ষণ ও প্রতিরোধ বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামব্যাসেডর-অ্যাট-লার্জ জন কটন রিচমন্ড গত ৩ থেকে ৬ আগস্ট বাংলাদেশ সফর করেন। সফরে সরকারের একাধিক প্রতিনিধির সাথে বৈঠকে মানব পাচার ঘটনায় কার্যকর বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি গুরুত্ব তুলে ধরেন। ঢাকার যুক্তরাষ্ট দূতাবাস বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে।
বার্তায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামব্যাসেডর-অ্যাট-লার্জ জন কটন রিচমন্ড মানব পাচার প্রতিরোধের উপায় ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানব পাচার (টিআইপি) প্রতিবেদনে উল্লিখিত সুপারিশ বাস্তবায়নে পরিমাপযোগ্য অগ্রগতি সাধনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা ও অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করতে তিনি এ সফর করেন।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকগুলোয় অ্যামব্যাসেডর-অ্যাট-লার্জ রিচমন্ডের সঙ্গে যোগ দেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। মানব পাচার রোধে ২০১৮-২০২২ সালের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত মিলার ও দূত রিচমন্ড। মানব পাচার রোধে বিচার, সুরক্ষা এবং প্রতিরোধের ওপর তারা গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা বিদেশে পাঠানোর আইনসিদ্ধ মাশুল জোগাড়ে ঋণের ফাঁদে ফেলে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর পাচারকারীদের জবরদস্তির বিষয়ে আলোচনা করেন। তাছড়া অভ্যন্তরীণ জবরদস্তিমূলক শ্রম এবং যৌনব্যবসার উদ্দেশ্যে পাচার শনাক্ত করা এবং পাচারকারীদের জবাবদিহিতরা বাড়ানো এবং আক্রান্তদের সহযোগিতামূলক সেবা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
কক্সবাজারে দূত মিলার ও রিচমন্ড শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনারের সঙ্গে বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাচারের ঝুঁকি এবং এই ঝুঁকি কমাতে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং এসব পাচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় কী হতে পারে– এসব পর্যালোচনা করেন। তারা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন এবং শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের হাইকমিশনারের প্রতিরোধ দলের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবপাচার ঝুঁকি সীমিত করতে সরকারের করণীয় পদক্ষেপ এবং আরো বিশদভাবে মানব পাচারের ঘটনা প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিনিধি দলটি ইউএসএআইডির অর্থায়নে ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন টিআইপি শেল্টারে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ওই আশ্রয়কেন্দ্রটি পাচারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের যেসব অন্তর্ভূক্তিমূলক সেবা দেয় সেগুলোর বিষয়ে অবহিত হন।
তাঁরা শিক্ষার্থীদের একটি দলের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন, সেখানে তাঁরা মানব পাচারের ঘটনার কার্যকর বিচার প্রক্রিয়ার গুরুত্ব; অভ্যন্তরীণ বা দেশের বাইরে, যেখানেই হোক, চোরাচালান ও মানব পাচারের মধ্যে তফাৎ, এবং বার্ষিক টিআইপি প্রতিবেদন এবং টায়ার টু ওয়াচ লিস্ট তালিকায় বাংলাদেশের পরপর তৃতীয়বারের অন্তর্ভূক্তির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন।
সফরের পুরো সময় জুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দূত মিলার ও রিচমন্ড আন্তর্জাতিক অংশীদার ও বিভিন্ন মিশনের প্রধানসহ কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। তারা মানবপাচার প্রতিরোধের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।