১ জুলাই থেকে ফাইজারের ভ্যাকসিন পাবেন কুয়েত ও সৌদি প্রবাসীরা
২৯ জুন ২০২১ ১৯:৪৫
ঢাকা: কুয়েত ও সৌদি আরব প্রবাসীদের যারা দেশে এসে আটকা পড়েছিলেন, তাদের ভ্যাকসিন গ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার অবসান হতে যাচ্ছে। এসব প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী পরশু বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে রাজধানীর সাতটি কেন্দ্রে কোভ্যাক্সের আওতায় দেশে আসা ফাইজার ও বায়োএনটেকের এই ‘কমিরন্যাটি’ ভ্যাকসিন তাদের দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ রাজধানীর সাতটি কেন্দ্রে প্রবাসীদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হবে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে একটি তালিকা দেওয়া হবে। যারা সৌদি আরব ও কুয়েত যাবেন, তাদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কারণ তারা এই ভ্যাকসিন বাদে অন্যগুলো গ্রহণ করছে না।
জানা যায়, সৌদি আরব ও কুয়েত প্রবাসী অনেক বাংলাদেশিই ছুটিতে দেশে এসে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে আর কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি। তারা এবারে কর্মস্থলে ফিরতে চাইলেও সৌদি আরব ও কুয়েত সরকার জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন না নেওয়া কেউ তাদের দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না। যারা ভ্যাকসিন নেননি, তাদের সেপ্টেম্বরের পরে ইকামাও (কাজের অনুমতিপত্র) নবায়ন করা হবে না বলেও জানায় কুয়েত সরকার।
এদিকে, দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের মজুত শেষ হয়ে আসায় এই ভ্যাকসিন তেমন কাউকে দেওয়া হচ্ছে না অনেকদিন থেকেই। এর মধ্যে চীনের সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার পেয়েছে বাংলাদেশ, কোভ্যাক্সের আওতায় এসেছে ১ লাখ ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিন। কিন্তু প্রবাসীদের অনেকেই বয়সের কারণে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে না পারায় তারা এসব ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগও পাচ্ছিলেন না।
শুধু তাই নয়, কুয়েত ও সৌদি আরব সরকার তাদের দেশে চীনের কোনো ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়নি। ফলে এসব প্রবাসীরা কর্মস্থলে ফিরতে চাইলে তাদের ফাইজারের ভ্যাকসিনই নিতে হবে। সে কারণেই তারা তাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সেটির জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় সেই প্রক্রিয়া এতদিন আটকে ছিল। এবারে ১ জুলাই থেকে ফাইজারের ভ্যাকসিনই পেতে যাচ্ছেন তারা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন ছাড়া কেউ গেলে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেনটাইন করতে হয়। এই সময় তাদের ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয় শুনেছি। এটা তো তাদের জন্য অনেক বাড়তি খরচ। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, তাদের এই কষ্ট থেকে রেহাই দিতে হবে। ভ্যাকসিন দিলে যেহেতু তাদের এই খরচটা হবে না, তাই এই সিদ্ধান্ত। তাছাড়া ফাইজারের ভ্যাকসিন যেহেতু সৌদি আরব ও কুয়েত দুই দেশের সরকারই গ্রহণ করছে, তাই তাদের ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
এর আগে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক ভ্যাকসিন জোটের উদ্যোগ কোভ্যাক্সের আওতায় গত ৩১ মে রাতে বাংলাদেশে আসে ফাইজারের এক লাখ ৬০০ ডোজ ভ্যাকসিন। ২১ জুন থেকে রাজধানীর তিনটি হাসপাতালে সেই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয় প্রাথমিকভাবে। দুই ধাপে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।
উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হলো কোভ্যাক্স, যা গঠিত হয়েছে বিশ্বের সব মানুষের সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক পাওয়া নিশ্চিত করতে।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর