Saturday 12 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুলনা-গাজীপুর সিটিতে চারদিন আগেই মাঠে নামবে র‌্যাব-বিজিবি


২৫ এপ্রিল ২০১৮ ১১:৩৮ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৩:২০
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।। 

ঢাকা: আগামী ১৫ মে খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ভোটের চারদিন আগে থেকে মাঠে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান- র‌্যাব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবি মোতায়েন করা হবে। নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন র‌্যাব এবং প্রতি দুই ওয়ার্ডে এক কোম্পানি বিজিবি সদস্য টহল ও রিজার্ভ র্ফোস হিসেবে কাজ করবে। এ বিষয়ে র‌্যাব ও বিজিবির সমন্বয়ে নিরাপত্তা ছক তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন। ইসির দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, আগামী ২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন কমিশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে ইসি সচিবালয় এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করবে। ওই বৈঠকে দুই সিটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে আইন শূঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে কর্মপরিকল্পনা চুড়ান্ত করা হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে দুই সিটির নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সুশীল সমাজসহ বিএনপির পক্ষ থেকে সেনা মোতায়েনের দাবি জানানো হলেও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কার্যপত্রে এ বিষয়ে কোন তথ্য নেই। নির্বাচন কমিশন স্থানীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করার বিষয়ে আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা এর আগে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন।

ইসি সূত্র জানায়, প্রার্থীদের আচরণ বিধি তদারকিতে থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং গুরুতর অপরাধের শাস্তির জন্য সামারি ট্রায়াল করে বিচার করবে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। ইতিমধ্যে আচরণ বিধি মনিটরিংয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সিটি এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত হিসেবে টহল শুরু করেছে। একই সঙ্গে ভোটকেন্দ্র পাহারায় থাকবে পুলিশ, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান ও আনসার ও ভিডিপি। এ সব বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা  সাধারণ ভোটকেন্দ্রে এস আইয়ের নেতৃত্বে ২২জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন। ভোটের আগের দু’দিন এবং ভোটের পরে একদিনসহ মোট চারদিন এসব সদস্যদের মাঠে রাখার পরিকল্পনা করেছে কমিশন।

ইসির তফসিল অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা পুরোদমে প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়েছেন। দলীয় প্রতীকের নির্বাচন হওয়ায় আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জনপ্রিয়তা প্রমাণের এ নির্বাচনে ইসির জন্যও অগ্নি-পরীক্ষা। কমিশন নিজেদের নিরপেক্ষতা দেখাতে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু কেন্দ্রে সিসিক্যামেরা ও ইভিএমে ভোট নেয়ার চিন্তা করছে, তবে এখন পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি।

এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মন্ডল সারাবাংলাকে বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ এখনো শান্তিপূর্ণ আছে। ১৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছে। পুলিশের কিছু সংখ্যাক সদস্য দায়িত্ব পালন করছে।

অন্যদিকে খুলনার রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনূচ আলী বলেন, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কোন কারন নেই। বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত সমন্বয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে তারাও এ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠকে, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন সে ধরণের ব্যবস্থা রাখার দাবি জানাবো।

এদিকে ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, এ দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রাখা যেতে পারে। সর্বশেষ রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আদলে এ দু’সিটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স এবং প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে।

গাজীপুর ৫৭টি ওয়ার্ডে র‌্যাবের ৫৭টি টিম, বিজিবি’র ২৯ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া খুলনায় র‌্যাবের ৩১টিম এবং বিজিবির ১৬ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন থাকবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের দুই দিন আগে, ভোটের দিন, এবং ভোটের পরে একদিন সব মিলিয়ে চারদিন মাঠে থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র‌্যাব-পুলিশের টিম ও আরও বাড়তি কয়েক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসাবে সংরক্ষিত রাখার সুপারিশও করেছে ইসি সচিবালয়।

প্রসঙ্গত, ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ পাঁচ লাখ ৯১ হাজার ১০৭ এবং নারী পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৮ জন।

আর ৩১টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৮ এবং নারী দুই লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৬ জন।

 

সারাবাংলা/জিএস/এমএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর