Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে দারিদ্র্য কমলেও বৈষম্য বেড়েছে: ড. দেবপ্রিয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:১৮

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি।

ঢাকা : বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আমাদের আর্থিক সক্ষমতা খুব একটা ভালো না। ট্যাক্স জিডিপি রেশিও অনেক কম। তবে আমাদের দারিদ্র্য কমেছে। কিন্তু বৈষম্য বেড়েছে। আর দারিদ্র্য এমন অবস্থায় আছে, যদি হঠাৎ করে একটা শক্ আসে, তাহলে দেখা যায় অনেক মানুষ আবার দরিদ্র হয়ে যায়। অন্যদিকে সামাজিক নিরাপত্তায়ও অনেক দুর্বলতা আছে। ভাতা অনেকেই পায় না। আবার দীর্ঘদিন ধরে ভাতার পরিমাণ না বাড়ায় তা কার্যকারিতা হারায়।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকামের (ইউবিআই) কার্যকারিতা মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান সংলাপে ইউবিআইয়ের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, আমাদের সংবিধানে প্রতিটি নাগরিককে সামাজিক, আর্থিক ও মানবিক নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া আছে। দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। আমরা এমন একটা সমাজ গড়ব যেখানে মানুষ উন্নয়ন ও বিকাশের নিশ্চয়তা পাবে। সেই নিশ্চয়তার অন্যতম বিষয় হলো- মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া, জীবনধারণের ন্যূনতম উপকরণ আছে সেইগুলোকে নিশ্চয়তা দেওয়া। আমাদের সংবিধানেও প্রতিটি নাগরিককে সামাজিক, আর্থিক ও মানবিক নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া আছে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন যে সরকার গঠিত হয়েছে, তাদের প্রতি মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা বেশি। সরকারও মানুষের এ আশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীল। আমি এই মুহূর্তটাকে গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের সন্ধিক্ষণ হিসেবে আখ্যায়িত করছি। এরকম সন্ধিক্ষণে আমাদের যত ধরনের স্বপ্ন, যত ধরনের আকাঙ্ক্ষা আছে সব তুলে ধরতে হবে। এটিই সঠিক সময়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার আলোচনা চলছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটিই এখন সময়; এ রকম প্রতিশ্রুতিশীল ধারণাকে জনগণের সামনে নিয়ে আসা। সমস্ত নাগরিকের জন্য পর্যায়ক্রমে একটি ন্যূনতম আর্থিক নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি কি না -তা এই গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সবার জন্য ন্যূনতম জীবন মান নিশ্চিত করা যায় এজন্য ইউবিআই করা হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার কী ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, তা এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এই ইউবিআই শুধু উন্নত দেশেই নয়, নিম্ন মধ্য আয়ের দেশও নিম্ন আয়ের দেশেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। সবাইকে ন্যূনতম আয় দেওয়া হলে এটায় কোনো অসুবিধা নেই; কিন্তু এখানে বড় চিন্তার জায়গা হলো আর্থিক সক্ষমতা হবে কীভাবে।

বিজ্ঞাপন

সংলাপ অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, ইউবিআই যেসব দেশে আছে সেখানে ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও অন্তত ১০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে উন্নতি হওয়ার পরে মাত্র ১.২ শতাংশ ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বেড়েছে। এই রেশিও দিয়ে অর্থায়ন সম্ভব কী না, সেটার পাশাপাশি অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ তো আছেই।

তিনি বলেন, এটা যেহেতু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাবে, এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া জরুরি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটার একটা রোডম্যাপ তৈরি করতে পারে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

সারাবাংলা/আরএস

ড. দেবপ্রিয় সিপিডি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর