Thursday 22 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ড. খলিলকে পদ থেকে সরিয়ে তার তথ্য জনগণের সামনে হাজির করতে হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ মে ২০২৫ ১৭:০৮ | আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ১৭:৫৭

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রিজভী।

ঢাকা: জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেশে-বিদেশে তার অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জনগণের সামনে হাজির করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

‘কেবলমাত্র আমি আমেরিকায় থেকেছি বলে আমাকে যদি বলা হয় আপনি বিদেশি নাগরিক, তাহলে কালকে তারেক রহমান সাহেবকেও সে কথা বলতে হবে। আমাকে ঢিল নিক্ষেপ করলে সেই ঢিল কিন্তু অন্যের ওপর গিয়েও পড়তে পারে’- গতকাল সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া ড. খলিলুল রহমানের এমন বক্তব্যের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘দেড় দশকের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের গণমানুষের নেতা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রূপকার, ভয়ংকর মাফিয়া অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বর্বরতম জিঘাংসার শিকার, বাংলাদেশের আপামর জনগণের প্রিয় নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে দেশের মানুষ বিষ্মিত-হতবাক, উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘ড. খলিল তার নিজের পক্ষে ওঠা প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পলাতক স্বৈরাচারের মতো তারেক রহমানের বিপক্ষে প্রোপাগান্ডার পথ বেছে নিয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না। ফ্যাসিবাদের দেড় দশক ড. খলিল কোথায় ছিলেন? কীভাবে ছিলেন? কোন দেশে ছিলেন? বিদেশে তার স্ট্যাটাস কী ছিল? ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে তার ভূমিকা কী ছিল?- অবশ্যই এসব প্রশ্নের জবাব তাকে দিতে হবে। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট- ড. খলিলকে অবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে দেশে-বিদেশে তার অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেশের জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘হাসিনা যেভাবে গণতন্ত্রকে কফিন পরিয়ে তথাকথিত উন্নয়নের ইন্দ্রজাল সৃষ্টির জন্য জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটাতেন, উপদেষ্টার এই মন্তব্য যেন তারই পুনরাবৃত্তি। ড. খলিলুর রহমান তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন প্রসঙ্গটি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ড. খলিলুর রহমানের এমন বক্তব্য নিঃসন্দেহে আত্মগরিমার প্রদর্শন এবং দুরভিসন্ধিমূলক। ড. খলিলুর রহমান তারেক রহমানের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা বিনষ্ট, জনসাধারণকে বিভ্রান্ত এবং মানুষের মাঝে তার মর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে নিয়েই এই বক্তব্য রেখেছেন, যা দুর্ভাগ্যজনক বিভ্রান্তির কবলের মধ্যে পড়ে।’

রিজভী বলেন, ‘তাকে মনে রাখতে হবে- বাংলাদেশ অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদের অনুকূল ভূমি নয়। তিনি তার কথাবার্তায় আচরণে ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছেন। তিনি হয়ত দেশি-বিদেশি কারও স্বার্থ চরিতার্থ করার মিশনে যুক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় ছিল ধ্বংসের শক্তি, জনগণ তা প্রতিহত করেছে। আমরা আর নতুন করে কোনো প্রভূত্ববাদের অধীনতার নাগপাশে বন্দি হতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘এখন দেশের জনগণের সামনে প্রশ্ন দীর্ঘ হচ্ছে যে, খলিলুর রহমানের মতো একজন বিতর্কিত এবং করিডোর-চ্যানেল-বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের কুশীলব বলে পরিচিত কী করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা’ হিসেবেও নিয়োগ পান?’’

রিজভী বলেন, ‘‘ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ দেড় দশকের আন্দোলন সংগ্রামের সময় ড. খলিলের নাম কেউ কখনো শোনেনি। সুসময়ে হঠাৎ করেই তিনি উড়ে এসে জুড়ে বসে উপদেষ্টা হয়েছেন। দেড় দশকের শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে দেশে-বিদেশে কোথাও যার কোনো উপস্থিতি ছিল না, না ছিল কোনো জোরালো বক্তব্য। তার কাছে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত কিনা এসব নিয়ে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।’’

বিজ্ঞাপন

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি এমন একজন ব্যক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বানিয়েছেন দেশের জন্য যার কোনো দৃশ্যমান অবদান নেই। তিনি তো বাংলাদেশের জন্য নন, বিদেশের জন্য কাজ করবেন। মানবিক করিডোর বা চ্যানেল নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশকে অস্থির করার পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’

সারাবাংলা/এজেড/এমপি

বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর