ঢাকা: গোষ্ঠী স্বার্থে পরস্পর বিরোধে জড়ালে সবার জন্য ধ্বংস অনিবার্য। বর্তমান সংকটকালে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখা জরুরি, না হলে দেশ আবারও ফ্যাসিবাদ ও বৈদেশিক প্রভাবের ভয়াল ছোবলের মুখোমুখি হবে।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে বিএমএ মিলনায়তনে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের ঐক্য, উলামায়ে কেরাম ও তাওহীদি জনতার করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এটি ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের ফসল। যেখানে ছাত্র থেকে যুবক, পুরুষ থেকে নারী, আলেম থেকে আওয়াম— সকলের রক্ত ঝরেছে। দল-মত নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের মাধ্যমেই এই বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের সংকীর্ণ দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থে এই সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।’
তারা বলেন, ‘এই সরকার যেন বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নাতীতভাবে বাস্তবায়ন করে। একই সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদ ও নারী অধিকার কমিশনসহ অন্যান্য সংস্কার কমিশন থেকে বিতর্কিত ব্যক্তিদের অপসারণ করে জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।’
বক্তারা বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর, রোহিঙ্গা সমস্যা ও অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক পক্ষসমূহ এবং জাতীয় স্টেইকহোল্ডারদের সমন্বয়ে গ্রহণযোগ্য ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে যেন জবাবদিহিতা মূলক সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যই আমাদের প্রধান শক্তি। বিভক্তি ও হঠকারী রাজনীতি দেশের অর্জিত বিজয়কে ব্যর্থ করে দিতে পারে। সকল পক্ষকে এখনই দায়িত্বশীল ও বিবেকবান ভূমিকা পালন করতে হবে।’
প্রস্তাবসমূহ:
- গোষ্ঠীগত ও দলীয় স্বার্থ পরিহার করে আন্তরিক ঐক্যই এখন সমাধান।
- ইন্টেরিম সরকারের প্রতি অহেতুক চাপ সৃষ্টির পরিবর্তে দায়িত্বশীল সহযোগিতা অব্যাহত রাখা।
- বিচার, নির্বাচন ও সংস্কার প্রক্রিয়াকে নিরপেক্ষ ও প্রশ্নাতীতভাবে সম্পন্ন করার দাবি।
- বিতর্কিত উপদেষ্টা ও কমিশন সদস্যদের অব্যহতির মাধ্যমে আস্থা পুনঃস্থাপন।
- চট্টগ্রাম বন্দর, রোহিঙ্গা ইস্যু ও জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বপক্ষীয় সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাওলানা জালাল উদ্দীন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ড. শফিকুল ইসলাম মাসউদ, ড. ফয়জুল হক, অধ্যক্ষ মোশাররফ হোছাইন, মাওলানা সানাউল্লাহ খান, মুফতি আবদুল্লাহ মাসুম, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার, মাওলানা আবদুল্লাহ আল মাসউদ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী ফেনী, মাওলানা হানযালা, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা মীর হুসাইন, মাওলানা ছানা উল্লাহ বিজয়নগর, মাওলানা মাহবুবুর রহমান আশরাফিসহ আরও অনেকে।
