ঢাকা: লন্ডনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অ্যাপ্রিসিয়েট করেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার (২২ জুন) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঙ্গে ছিলেন দলটির চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চেয়ারপারসন পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু বলেন, ‘বৈঠকে স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের নির্বাচন, আগামী দিনের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তুতি, আমাদের মতামত জানতে চাওয়া হযেছে। এ ছাড়া তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে চিফ অ্যাডভাইজারের যে বৈঠকটা হয়েছে, সেটাকে অ্যাপ্রিসিয়েট করেছেন তারা। এই মিটিংয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছেন তারা এবং সে মিটিংয়ের ফলে যে বড় ধরনের স্বস্তি আসছে এবং বাংলাদেশ নির্বাচনমুখী হয়েছে, সেটাও আলোচনায় আসছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই দুই দেশের মধ্যে যে রিলেশনশিপগুলো আছে, বিশেষ করে ট্যারিফ নিয়ে, একটা বড় একটা বিষয়। আমেরিকানরা বাংলাদেশের ওপর ট্যারিফ দিয়েছে, সেটার ওপর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এই ট্যারিফ বাংলাদেশ কীভাবে হ্যান্ডেল করবে, বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের মতামত জানতে চেয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কথা বলে আমেরিকার সঙ্গে ট্যারিফ ইস্যুটার একটা সলুশন বের করব— এ আলাপটা হয়েছে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ আলাপ।’
আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশের ট্যারিফ যদি বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তো আমাদের গার্মেন্টস রফতানি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তারা এবং আমারা এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কাজ করব, সহযোগিতা করব, যাতে ট্যারিফের ব্যাপারটা সুষ্ঠু সমাধান হয়। দুই দেশের মধ্যে আরও কীভাবে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়, সেটা নিয়ে আলোচনায় আসছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা জেনে খুশি হয়েছে- ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের ব্যাপারে যে মোটামুটি একটা জায়গায় আসছি— এটা তো একটা স্বস্তির ব্যাপার। শুধু বাংলাদেশের ভেতরে তো না, বাংলাদেশে যারা পার্টনার আছে বিদেশে, আমেরিকাসহ, সবার জন্য এটা স্বস্তির। কারণ, সবারই তো এসব ব্যাপারে একটা কর্মপরিকল্পনা থাকে; আগামী দিনে তারা কীভাবে কাজ করবে। সুতরাং নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হলে সকলের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে, তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিতে অনেক সহজ হয়ে যায়।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মতপার্থক্য তো থাকতেই হবে। আমরা মনে করি প্রত্যেকটা দলের একটা নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা-দর্শন আছে। মতপার্থক্য না থাকার কোনো সুযোগ নাই এখানে। যে বিষয়গুলোতে ঐক্যমত হবে, সেটা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব— এটাই তো সিদ্ধান্ত। একটা প্রোক্লেমেশনের কথা বলেছে, এ ব্যাপারে সবাই একমত যে, এখানে ঐকমত্যের ব্যাপারে আছে।’
সাবেক সিইসির বিরুদ্ধে এতদিন পর মামলা কেন?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এতদিন তো মামলার সুযোগ ছিল না। বিগত স্বৈরাচারের সময় মামলার করার কোনো সুযোগ ছিল না। এখন সুযোগ তৈরি হয়েছে মামলা করবে, এটা খুবই স্বাভাবিক।’