ঢাকা: প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি এবং দেশ ও ইসলামবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) বাদ জোহর কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের দ্বিতীয় অধিবেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টায় সমাবেশের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়।
প্রথম অধিবেশনে ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দসহ সারা দেশে থেকে আসা মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যয়ের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীকে উৎসাহ দিতে নির্দিষ্ট সময়ের ৩ ঘণ্টা আগে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সভাপতিত্বে মহাসমাবেশের মূল অধিবেশন শুরুর ৩-৪ ঘণ্টা আগেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং ঢাকার নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমর্থক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে হাজির হন। ঢাকার বাইরের নেতা-কর্মী সমর্থকেরা ভোর রাতেই ঢাকা পৌঁছান। তারা বায়তুল মোকাররমসহ ঢাকার বিভিন্ন মসজিদে রাতযাপন করেন।
দুপুর পৌনে ২টায় সমাবেশস্থলে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সংলগ্ন গেট, স্বাধীনতা জাদুঘরের প্রধান ফটক এবং চারুকলা সংলগ্ন গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্রোতের মতো নেতাকর্মী প্রবেশ করে। ঢাকা টিএসএসসি গেট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় ঢাকার পশ্চিম ও দক্ষিণ এলাকা দিয়ে আসা হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমর্থক কালী মন্দির গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করে।
দুপুরে ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চার পাশের সড়ক ইসলামী আন্দোলনের মিছিলে মিছিলে সয়লাব হয়ে যায়। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দলীয় ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে, টিশার্ট পরে মিছিলসহ উদ্যানের দিকে অগ্রসর হন ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। কওমী, আলিয়া মাদরাসার পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ ব্যানারে মহাসমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে বরাবরের মতোই উদ্যান এবং এর আশপাশে দলীয় প্রতীকের রেপলিকা, হেডার, ফেস্টুন, কোর্ট পিন, টুপি, পাগড়ি, জায়নামাজ, আতর, তজবি ও স্বল্প মূল্যে খাবার দোকান বসানো হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। যেখানে পাউরুটি, কলা, পানি, সরবত পাওয়া যাচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলনের এ সমাবেশে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে একমত— এমন সব দলের নেতারাও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। সমাবেশের একটা পর্যায়ে তারা মঞ্চে আসবেন বলে ধারাণা করা হচ্ছে। সমাবেশ সফল করতে নিরলসভাবে কাজ করছে ইসলামী আন্দোলনে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে উদ্ভূত যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, শাহাবাগ মোড়, শিক্ষাভবন মোড়, হাইকোর্ট মাজার এলাকা, কদম ফোয়ার, মৎসভবন মোড়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বর, চত্বর সংলগ্ন গেট, স্বাধীনতা জাদুঘর প্রধান ফটক এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার লোক নিজ নিজ অবস্থানে দায়িত্ব পালন করছে।