Tuesday 22 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জনবসতিপূর্ণ শহরে বিমান প্রশিক্ষণ কেন?’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ জুলাই ২০২৫ ১৬:৪১

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় আয়োজিত দোয়া-মাহফিলে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

ঢাকা: ঢাকার মতো জনবসতিপূর্ণ শহরে বিমান প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় আয়োজিত দোয়া-মাহফিলে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও সুস্থতা কামনায় এ দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হল যে, একটা প্রশিক্ষণ বিমান তাও ফাইটার বিমানের প্রশিক্ষণ এমন একটা জনবসতিপূর্ণ শহরে হয় কিনা। আমরা জানি এই ধরনের প্রশিক্ষণ যেখানে জনগণ থাকে না, সেখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু, এই প্রশিক্ষণ ঢাকা শহরের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হল কেন?’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে মানুষের প্রশ্ন রয়েছে বিমান বাহিনীর এই সম্পর্কে তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকা দরকার এবং এটার জবাব কে দেবে? এটা আপনি কি জবাব দেবেন? আমাদের দেশে বছর বছর যুদ্ধ না হোক সেনাবাহিনীর এক মহড়া হয় সেটাও আমরা জানি অনেক দূরাঞ্চলে হয়, জনাকীর্ণ এলাকায় হয় না।’

গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘আজকে দেখবেন ঢাকা শহরে দিনের বেলায় কোনো প্রশিক্ষণ মোটরযান দেখবেন না। এগুলো এখন রাতের বেলায় হয় তাও প্রধান সড়কে নয়। অর্থাৎ শহরের ভেতরে ছোট ছোট রাস্তায় গাড়ি চালনার প্রশিক্ষণ হয়। এটা সাবধানতা।’

‘আর একটা বিমানের প্রশিক্ষণ হবে সেই প্রশিক্ষণটা, আরেকটা কথা আছে সেই প্রশিক্ষণটা প্রত্যেকটা যুদ্ধ বিমানই হোক বিমানটা স্টার্ট করার আগে তার পরীক্ষা করাতে হয় এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বা ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে যে, ওই বিমানটা উড়ানো যাবে কিনা এবং এটা সঠিকভাবে চালানো যাবে কিনা তার একটা পূর্ব পরীক্ষার ব্যাপার আছে। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে এই প্রশিক্ষণ যারা দিচ্ছেন বা তদারকি করছেন তারা বিমানটা সচল থাকার মতো যান্ত্রিক অবস্থা ছিল কিনা, সেটা পরীক্ষা করা হচ্ছে কিনা? এই বিষয়গুলি বা এই প্রশ্নগুলো আজকে জনগণের মনে উঠেছে’— বলেন গয়েশ্বর।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার কথা বলছি না, জনগণের অনুভূতি জনগণের প্রশ্নের কথাগুলে বলছি, আমার মনে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই শুনতে পাচ্ছেন। আমরা দেখতে চাই, এখানে আপনাদের কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল কিনা, আকাশের বিমানটি উড়ানোর আগে বিমানটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে কিনা যথাযথভাবে এবং এই বিমানটা চলার মতো সক্ষম ছিল কিনা?’

গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘সেজন্যই আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জনগণের পক্ষ থেকে প্রশ্নের উত্তরগুলি খুঁজে বের করা এবং জানার জন্য দাবি করছি। আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। যাতে ভবিষ্যতে এমন আরেকটা দুর্ঘটনা জন্ম না দেন তার জন্য সতর্ক থাকতে জাতির এটা জানা উচিত। এই প্রশ্নগুলো এখানে আপনারা সবাই আছেন আপনারা কি চান না? আমি কি নিজে নিজে আবিস্কার করি নাই, এটা জনগণের কথা, জনগণের জিজ্ঞাসা।’

তিনি বলেন, ‘সবাই আমরা শোকাহত, এই সাত্বনার কোনো ভাষা নাই। এই ক্ষতি পূরণ হবার নয়। মৃত্যু মনে হয় ২৭ ছাড়িয়েছে। যারা বেঁচে থাকবে তারাও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে না। এই শিশুরা মরে গেল, ওদের মা-বাবার চোখের জল কী দিয়ে পূরণ করব?’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা সারাদেশে শোক পালন করছি, আমরা মাসব্যাপী বছরব্যাপী যদি শোক পালন করি আমরা তো তাদের ফেরত পাবো না। আমরা অন্তরের অন্তরস্থল থেকে দেশবাসী ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি তাদের আত্মা শান্তি কামনা করি। তাদের শোকসন্তপ্ত মা-বাবাকে শোক সহ্য করার শক্তি সৃষ্টিকর্তা দিন।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, ছাত্র দলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এমপি

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর