ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একজন মায়ের চোখে বাংলাদেশ যেমন: নিরাপদ, মানবিক, মর্যাদাপূর্ণ— আমরা তেমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’-এর প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে ফেসবুক লাইভে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে ২০২৪ সালের এই দিনে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ পালিয়ে গিয়েছিল। রাহুমুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘‘দিনটি গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের বিজয়ের দিন। অন্তর্বর্তী সরকার এই দিনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং আগামীতে এটি সরকারি ছুটি হিসেবে পালিত হবে বলে জানান তিনি।’’
তারেক রহমান বলেন, ‘একুশ শতকের বাংলাদেশে একটি বিভীষিকাময় শাসন কায়েম করা হয়েছিল। গুম, খুন, নির্যাতন, নিপীড়ন ছিল স্বাভাবিক। ভিন্নমতের লাখো মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করে নির্বাসিত করা হয়। অনেকের পারিবারিক বন্ধনও ছিন্ন হয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, “আয়নাঘরে’ মানুষকে বছরের পর বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল। ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমের মতো নেতার আজও খোঁজ মেলেনি।’’
২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণ করে তারেক বলেন, ‘শুধু জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারের বেশি মানুষ শহিদ হন। কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ আহত হন। অনেকে অঙ্গহানি কিংবা চোখ হারিয়ে আজীবন পঙ্গু হয়ে আছেন। ৭১ সালে যেমন স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ ছিল, ২৪ সালে ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ।’
তিনি শহিদদের স্মরণ করে বলেন, ‘এই ঋণ আমরা শোধ করবো একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা আমাদের প্রথম কাজ।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদ কায়েম হবে না, ইনশাআল্লাহ। কেউ গণতন্ত্র হত্যা করার সুযোগ পাবে না। যারা কৌশলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট শাসনের তুলনা টানছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই— ৫ আগস্ট যা ঘটেছে, তা বিশ্ব ইতিহাসেও নজিরবিহীন।’
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘হিটলারের নাৎসিবাদের মতোই বাংলাদেশের পলাতক ফ্যাসিস্ট শাসনের সময়ও গৌরব করার কিছু নেই। জনগণের চোখে ডাকাত চ্যারিটি করলেও গ্রহণযোগ্য নয়।’
শেষে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ। শহিদদের রক্ত বৃথা যাবে না। এই দেশ হবে ইনসাফভিত্তিক মানবিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।’