ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি আবেগপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। বার্তায় তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ‘রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের’ প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং সেই আন্দোলনের ফলাফল ও ভবিষ্যৎ পথচলা নিয়ে বিশ্লেষণ করেন।
সারজিস আলম ফেসবুকে লেখেন, ‘স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আপামর ছাত্র জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে এক বছর পূর্ণ হয়েছে। তিনি লুকিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কিন্তু তার রেখে যাওয়া অসুস্থ, দুর্নীতিপরায়ণ চিন্তা ও চর্চা এখনো সমাজে বিস্তার করে আছে।’
তিনি বলেন, এক বছরে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাওয়ার আশা করা অযৌক্তিক নয়, কিন্তু দুঃখজনকভাবে যতটুকু সম্ভব ছিল তাও অর্জন হয়নি। কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র গঠনে রাজনীতিবিদ, আমলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিভিল সোসাইটি, মিডিয়া, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী মানুষ ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগকে অপরিহার্য বলে মনে করেন তিনি।
‘একটি কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র নির্মাণে প্রত্যেকে একে অপরের পরিপূরক। কোনো একটি অংশের অনাগ্রহ অন্য অংশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে’ — বলেন সারজিস।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ব্যক্তি হিসেবে পালিয়ে গেলেও তার দীর্ঘ দিনের স্বৈরশাসন ও অপশাসনের চর্চা সমাজের বিভিন্ন স্তরে গেঁথে গেছে। সেগুলোকেই প্রতিনিয়ত প্রতিহত করতে হবে।
সারজিস আলম সাধারণ মানুষের মধ্যেও সিস্টেমিক দুর্নীতির চর্চা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “রিকশাচালক থেকে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত, যার যতটুকু সামর্থ্য সে ততটুকু ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। আমাদের লড়াইটা শুরু করতে হবে ব্যক্তি পর্যায় থেকে।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “যে প্রজন্ম শেখ হাসিনার মতো একজন ফ্যাসিস্ট শাসকের পতন ঘটাতে পারে, সেই প্রজন্মের সামনে কেউই আর পার পেয়ে যাবে না— যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, প্রতিরোধ গড়ে তুলি।”
চরম ষড়যন্ত্র, বিভাজন এবং প্রচারণা মোকাবিলা করে জনগণকে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সবশেষে, সারজিস আলম শহিদদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে বলেন, ‘৫ আগস্ট আমাদের কাছে এক পরম আমানত। এই আমানতের খেয়ানত না করার প্রতিজ্ঞাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ এনে দেবে। ইনশাআল্লাহ, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেটা করবো।’