Monday 11 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পিআর নিয়ে সিদ্ধান্তের আগেই নির্বাচনের মাস নির্ধারণ জন দাবির পরিপন্থী’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ আগস্ট ২০২৫ ১৯:২৪ | আপডেট: ৬ আগস্ট ২০২৫ ১৯:৫৬

ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

ঢাকা: পিআর নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই নির্বাচনের মাস নির্ধারণ করা জনদাবির প্রতি স্পষ্টত উপেক্ষা করা বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। তার ভাষণ সুলিখিত এবং তার পাঠ আবেগ মিশ্রিত। ভাষণে সরকারের নানা সাফল্যের কথা এসেছে এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা এসেছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সুদীর্ঘকাল থেকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। অভ্যুত্থানের পরে পিআরের পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠন হয়েছে এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আমরা বারবার উভয়কক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন আয়োজনের জন্য সংস্কার কমিশনে কথা বলেছি, লিখিত জানিয়েছি। এর যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিৎ ছিল পিআর নিয়ে সংস্কার কমিশনে এজেন্ডা রাখা। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনে আমাদের বারবার প্রচেষ্টা সত্যেও নিম্নকক্ষে পিআর নিয়ে কোনো এজেন্ডাই রাখা হয় নাই। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি।’

সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পরে রাজনৈতিক সংস্কার সংশ্লিষ্ট সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পিআর নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই নির্বাচনের মাস নির্ধারণ করা জনদাবির প্রতি স্পষ্টত উপেক্ষা করা। আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানাব, নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে এই জনদাদাবির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কার্যক্রম শুরু করবেন না। একই সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহবান জানাব, অতিদ্রুত পিআর নিয়ে এজেন্ডা নির্ধারণ করে আলোচনা শুরু করুন।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ এখনো না হওয়া আমাদেরকে সংস্কার নিয়ে অনিশ্চয়তায় নিক্ষেপ করেছে। গণঅভ্যুত্থানের এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক যাত্রাও শুরু হয়েছে। তিনিও (প্রধান উপদেষ্টা) বারবার বলছেন, ফেব্রুয়ারি দূরে নয়। কিন্তু সংস্কারের প্রতিশ্রুতি সম্বলিত জুলাই সনদ এখনো হয়নি। সংস্কারের রুপরেখা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় নাই। জনতার প্রত্যাশা অনুসারে সংস্কারকে স্থায়ী করার ব্যবস্থা না নিয়ে এখন সংস্কারকে পরবর্তী সরকারের ওপরে ন্যাস্ত রেখে পুরো সংস্কার কার্যক্রমকে অনিশ্চিত করে রাখা হয়েছে।’

‘আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনীভিত্তি তৈরি করতে হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে’- বলেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

তিনি বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সুদীর্ঘকাল থেকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। অভ্যুত্থানের পরে পিআরের পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠন হয়েছে এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আমরা বারবার উভয়কক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন আয়োজনের জন্য সংস্কার কমিশনে কথা বলেছি, লিখিত জানিয়েছি। এর যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিৎ ছিল পিআর নিয়ে সংস্কার কমিশনে এজেন্ডা রাখা। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনে আমাদের বারবার প্রচেষ্টা সত্যেও নিম্নকক্ষে পিআর নিয়ে কোনো এজেন্ডাই রাখা হয় নাই। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি।’

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু উচ্চকক্ষের ভোট গ্রহণ কিভাবে হবে এবং উচ্চকক্ষের ক্ষমতা, কার্যপরিধি ও মর্যাদা কি হবে তা নিয়ে বিস্তারিত কোনো সিদ্ধান্ত হয় নাই। নির্বাচনের আগে এইসব বিষয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্মরণীয় নির্বাচন আয়োজন করতে চাইছেন। তার ইচ্ছাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি, আইন-শৃংখলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা, সক্রিয়তা নিয়ে দেশের কেউ-ই আশ্বস্ত হতে পারছে না। আগামী ফেব্রুয়ারির আগে এর সমাধান হবে তেমন আশা করার যৌক্তিক কারণ এখনো দেখা যাচ্ছে না। আমরা মনে করি, দেশের আইন-শৃংখলা উন্নতি না হলে আগামী নির্বাচনও কলংকিত হতে পারে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আমাদের জন্য কঠিন হবে। তাই বলব, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য জনপ্রশাসন থেকে ফ্যাসিস্টের অবশিষ্টাংশের ব্যাপারে দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিন। দল নিরপেক্ষ পেশাদার জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে কার্যক্রম জোড়াল করুন।’

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ফ্যাসিস্টের বিচারের প্রসঙ্গ এসেছে। তবে এর মাত্রা, ব্যাপকতা ও গতি নিয়ে আমাদের অসন্তোষ আছে। সেটা জানিয়ে বিচার কার্যক্রমের পরিধি আরও বিস্তৃত করে এর গতি বৃদ্ধি করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অনেক সাফল্যের কথা বলেছেন। তবে আইন-শৃংখলা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার বাস্তবতা স্বীকার করতেই হবে। পাচার করা টাকা উদ্ধার এখনো দৃশ্যমান হয় নাই। কর্মসংস্থানে আশাজাগানিয়া কিছু এখনো দেখা যাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ে জনতার কষ্ট এখনো বিদ্যমান। এসব বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়ার আহবান করব।’

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ইতিবাচক রাজনীতি করে। আমরা সবসময় সম্ভবনাকে বড় করে দেখি। আমরা নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনের জন্য আমাদের প্রস্তুতিও চলমান। আমরা আশা করি, সরকার আমাদের উদ্বেগ, আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে আমলে নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে। জুলাই সনদ দ্রুত আলোর মুখ দেখবে। পিআর নিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধান হবে। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতির মাধমে প্রত্যাশামাফিক আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জুলাই অভ্যুত্থান স্বার্থকতা পাবে।’

সারাবাংলা/এজেড/এমপি

নির্বাচন পিআর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম

বিজ্ঞাপন

ঢাকার বাতাসে স্বস্তি
১১ আগস্ট ২০২৫ ০৯:৪১

আরো

সম্পর্কিত খবর