ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানা কারণে বিলম্বিত হলে দেশ ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, বিশেষ করে প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতির দাবি তুলে যদি কেউ নির্বাচনের সময়সূচি পিছিয়ে দিতে চায়, তবে সেটি হবে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত এবং স্বৈরাচারী শক্তির জন্য সুযোগ তৈরি করবে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ চিকিৎসক পরিষদের (ডিএমপি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বোঝে না। মানুষের জন্য এমন কোনো বিভ্রান্তিকর প্রক্রিয়া গ্রহণ করা উচিত নয়, যা নির্বাচন বিলম্বিত করে দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দেয়। যদি আপনাদের কর্মসূচির কারণে ভোট নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হয়, তবে লাভবান হবে স্বৈরাচার।’
তিনি অতীতের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘বিএনপির হাত ধরেই দেশে সংস্কারের সূচনা হয়েছিল। অথচ আজ যারা সংস্কারের বুলি আওড়াচ্ছে, তারাই অতীতে স্বৈরাচারের পুনর্বাসনে ভূমিকা রেখেছিল।’
তিনি যোগ করেন, ‘আজকে যারা বড় বড় কথা বলেন, যাদের অতীতে কোনো রাজনৈতিক রেকর্ড নেই, যাদের জনগণ কোনো দায়িত্ব দেয়নি— তাদের কথাবার্তার পরিণতি স্বৈরাচারের পক্ষেই চলে যাচ্ছে। এতে দেশ ভয়াবহ বিপদের দিকে ধাবিত হতে পারে।’
গণতন্ত্র রক্ষায় ভিন্নমতকে সহ্য করার মানসিকতার ওপর গুরুত্বারোপ করে ডা. জাহিদ বলেন, ‘আপনারা দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন। গণতন্ত্র মানে ভিন্নমত সহনশীলতা। কিন্তু এটা মানি না, ওটা মানি না— এমন বাচ্চা ছেলেমানুষি আচরণ দেশের জন্য ক্ষতিকর। গায়ের জোরে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে দেশে গণতন্ত্র টিকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন পেছানোর পক্ষে যারা সওয়াল করছেন, তারা প্রকৃতপক্ষে কার স্বার্থে কাজ করছেন তা স্পষ্ট নয়। বরং তাদের অবস্থান নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তারা স্বৈরাচারের শক্তিকে সুবিধা করে দিচ্ছে কি না।’
এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতিও আহ্বান জানান দ্রুত ভোটের রোডম্যাপ ঘোষণা করার জন্য। ডা. জাহিদ বলেন, সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কমিশনের উচিত অনতিবিলম্বে নির্বাচনের রূপরেখা প্রকাশ করা। এতে জনগণের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তা দূর হবে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরবে।