ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর মাহমুদ খসরু চৌধুরী বলেছেন, আগামীতে বিএনপি দেশের প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষ—কৃষক, তাতী, কামার ও কুমারের মতো মানুষদের নিয়ে একসাথে কাজ করবে। দেশের অর্থনীতিতে সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে আসাই লক্ষ্য। সেখানে ওয়ার্ল্ড ভিশনেরও একটি বড় ভূমিকা থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ওয়ার্ল্ড ভিশন আয়োজিত ৪র্থ জাতীয় শিশু ও যুব সম্মেলনে তরুণদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শুধু পুঁথিগত বিদ্যায় শিক্ষিত না হয়ে তরুণ প্রজন্মকে যুগোপযোগী দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে দেশের বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে সম্পদে রূপান্তর করার জন্য সমন্বিত পরিকল্পনার ওপর জোর দেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সবাইকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে এমন ধারণা ভুল। একজন দক্ষ প্লাম্বার বা ইলেকট্রিশিয়ানও ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে বেশি আয় করতে পারে।
তিনি যোগ করেন, দেশে দক্ষতার বড় অভাব রয়েছে, যা অগ্রযাত্রায় বাধা। তরুণদের যে কোনো একটি স্কিল ডেভেলপ করতে হবে এবং যা করতে আনন্দ পান, সেটিই করুক।
শিক্ষাকে শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ না রেখে খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন। গান, নাটক, ছবি আঁকা— এসব মনোজগৎকে সমৃদ্ধ করে এবং পূর্ণাঙ্গ মানুষ গড়ে তোলে।
তিনি দেশের তরুণদের ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই সম্ভাবনাকে সম্পদে রূপান্তর করতে হলে স্কিল ডেভেলপমেন্ট অপরিহার্য।
সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের সৃজনশীল মানুষদের নিয়ে ‘ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ‘ওয়ান ভিলেজ, ওয়ান প্রোডাক্ট’ নীতির মাধ্যমে গ্রামীণ শিল্পীদের ডিজাইন, কাঁচামাল ও মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মের সুবিধা দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা হবে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর মানুষের মনোজগতে যে পরিবর্তন এসেছে, তা রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দেশের সব জনগণ উন্নয়ন ও সুযোগের ভাগীদার হবে।
তরুণদের ওপর আস্থা রেখে আমীর খসরু বলেন, “আমাদের ছেলে-মেয়েরা বিশ্বের মেধাবীদের মধ্যে অন্যতম। প্রয়োজন শুধু আত্মবিশ্বাস এবং সঠিক সুযোগ। তারা দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে পারবে।”
শিক্ষা ও সুযোগের সমান বণ্টন নিশ্চিত করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন তিনি। তরুণদের মেধা, দক্ষতা ও দেশপ্রেম দিয়ে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সেমিনারে শুরুতে পিছিয়ে পড়া শিশুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাচ অনুষ্ঠিত হয়।