চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রথম মনোয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ক্রীড়া সম্পাদক পদে চবি’র শাহজালাল হলের ছাত্র তায়েবুল আলম ফরাজী।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে চাকসু ভবনে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় থেকে এ মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়।
চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, চাকসু’র ২৬টি পদে এবং হলের ১৫টি পদে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত মনোয়নপত্র বিতরণ চলবে।
আগামী ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে চাকসু নির্বাচন।
গত ২৮ আগস্ট ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। এটি প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।
১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা তাদের ১৪টি হলের অধীনে নির্বাচনে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করবেন।
ইতোমধ্যে খসড়া আচরণবিধি ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে চাকসু নির্বাচন কমিশন। খসড়া তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার ২৫ হাজার ৭৫২ জন।
আচরণবিধি অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার পর নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে প্রচার চালানোর কথা বলা হয়েছে।
চাকসু গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ভিপি, জিএস, এজিএস ছাড়াও ক্রীড়া সম্পাদক, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক, সাহিত্য সংস্কৃতি এবং প্রকাশনা সম্পাদক, সহ- সাহিত্য সংস্কৃতি এবং প্রকাশনা সম্পাদক, দপ্তর, সহ দপ্তর, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রী কল্যান বিষয়ক সম্পাদক, সহ ছাত্রী কল্যান বিষয়ক সম্পদক, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ক সম্পাদক, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক, সহ যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার এবং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে এবং পাঁচটি নির্বাহী সদস্যসহ ২৬টি পদে নির্বাচন হবে।
এছাড়া হলগুলোতে ভিপি, জিএস, এজিএস ছাড়া ক্রীড়া সম্পাদক, সাহিত্য সংস্কৃতি এবং প্রকাশনা সম্পাদক, দপ্তর, রিডিং, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি, সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান, গবেষণা তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক এবং তিনটি নির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন হবে।
১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর মোট ছয়টি চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।এরপর ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১ সালে এবং ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ চাকসুর নির্বাচন হয়।
১৯৮১ সালে ভিপি পদে জসীম উদ্দিন সরকার ও জিএস পদে আব্দুল গাফফারসহ ছাত্রশিবিরের পূর্ণ প্যানেল জয়ী হয়। এরপর ১৯৯০ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে তৎকালীন জাতীয় ছাত্রলীগের নেতা নাজিম উদ্দিন (ভিপি), আজিম উদ্দিন (জিএস) ও ছাত্রদলের মাহবুবের রহমান শামীম (এজিএস) নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতা ফারুকুজ্জামান নিহত হলে চাকসুর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর গত ৩৫ বছরে আর চাকসু নির্বাচন হয়নি।