ঢাকা: দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাম্প্রতিক নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূলের নীল নকশা সাজানো হচ্ছে কি না— এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএবি) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৮তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘যারা অভ্যুত্থানে ছিলেন, তাদের অনেকে এখন সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। বিএনপি বরাবরই দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশ্রিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক চর্চার ধারক।’
তিনি জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ইসলাম অনেক আগেই বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই মওদুদী মতবাদ প্রচারের চেষ্টা করলে জনগণেরও বক্তব্য জানানোর অধিকার রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, উপাচার্য ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ জারি করে সাবেকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, যা একচেটিয়া নির্বাচনের ইঙ্গিত বহন করছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাকসু) নির্বাচন নিয়েও তিনি সমালোচনা করেন। তার দাবি, ব্যালট পেপার সরকারি প্রেসে ছাপানোর সুযোগ থাকলেও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছাপানো হয়েছে, যার মালিক একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ। এতে রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আঁতাতের অভিযোগ তোলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, জাবির শিক্ষকরা এসব অনিয়ম দেখে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, যা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ভয়াবহ অশনি সংকেত।
রিজভী সতর্ক করে বলেন, ‘এ দেশের মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, আবার টেলিভিশনে নাটক দেখে, গান শোনে—মানুষের জীবনযাপন বহুমাত্রিক। অথচ একপাক্ষিক আধিপত্য চাপিয়ে দিলে তা নতুন ধরণের ফ্যাসিবাদের জন্ম দেবে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত পর্যায় হলো উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্র ধর্মীয় রাজনীতির বিকাশ, যা গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর হতে পারে।’