ঢাকা: আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিকে গণতন্ত্রের উৎকৃষ্ট মডেল বলা ‘অবান্তর’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘বিশ্বের অধিকাংশ উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ— যেমন ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু রয়েছে। তাহলে আমাদের দেশে হঠাৎ পিআর পদ্ধতিকে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের মডেল বলা হচ্ছে কেন? এটি অবান্তর ও বিভ্রান্তিকর কথা। তারা (জামায়াতে ইসলামী) হয়তো বিভ্রান্তি তৈরি করছে বা অন্য কোনো পরিকল্পনা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যুক্ত, তারা নিশ্চয়ই এমন অবস্থানে পৌঁছাবেন যাতে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা বিঘ্নিত না হয়। না হলে কালো ঘোড়া ঢুকে যেতে পারে।’
রিজভী উল্লেখ করেন, ‘জাপানের মতো উন্নত গণতান্ত্রিক দেশেও পিআর পদ্ধতি মাত্র ৩৭ শতাংশ আসনে চালু, এবং সেখানেও তা নিয়ে সমালোচনা চলছে। বিশ্বের কোথাও এটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ আমাদের দেশে এটি হঠাৎ চালুর প্রচেষ্টা জনগণকে বিভ্রান্ত করবে।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষই পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত নন। এখন এ নিয়ে আলোচনা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।’
গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘জুলাই সনদে গণভোটের কথা আছে, কিছু দল আগে করার প্রস্তাব দিচ্ছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রোজা শুরু হবে, তাই ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচন করা যুক্তিযুক্ত। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে করাই সবচেয়ে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হবে।’
তিনি বলেন, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি এসে আলাদা করে গণভোট আয়োজন সম্ভব নয়। এতে সময়, প্রস্তুতি ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হবে।’
দেশের অর্থনৈতিক সংকট প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগ প্রায় শূন্যে নেমে গেছে। নির্বাচিত সরকার না থাকায় বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারাচ্ছেন, যার ফলে কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে সংকট আরও গভীর হবে। তাই দ্রুত জাতীয় নির্বাচনই এখন সময়ের দাবি।’