Sunday 19 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাপলা প্রতীকের দাবিতে অনড় এনসিপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৩২ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৪৮

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ফাইল ছবি

ঢাকা: শাপলা প্রতীকের দাবিতে অনড় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলেছে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) যদি শাপলা ব্যতীত অন্য কোনো প্রতীক চাপিয়ে দিতে চায়, তা এনসিপির জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।

রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী নির্বাচন কমিশনে দলের পক্ষ থেকে লিখিত জবাব দাখিল করেন। এতে ইসির ১৩ অক্টোবরের চিঠির জবাব হিসেবে দলটি তাদের অবস্থান ও আইনি যুক্তি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে।

চিঠিতে এনসিপি জানায়, তারা ২২ জুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন দাখিলের সময় থেকেই শাপলা প্রতীক সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছে। পরবর্তীতে ৩ আগস্ট, ২৪ সেপ্টেম্বর ও ৭ অক্টোবর তারিখে ইসির কাছে তিন দফা লিখিত দরখাস্তে যথাক্রমে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ ও ‘লাল শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এমনকি প্রতীকের বিভিন্ন ভার্সন ও নমুনা ছবি কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এনসিপি অভিযোগ করে, এসব আবেদন অনিষ্পন্ন রেখেই নির্বাচন কমিশন বিধিবহির্ভূতভাবে দলটির প্রার্থিত প্রতীক বাদ দিয়ে ইচ্ছেমতো প্রতীক বরাদ্দের হুমকি দিচ্ছে, যা স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, কমিশন এখনো পর্যন্ত প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার কোনো লিখিত নীতিমালা বা মানদণ্ড প্রকাশ করেনি। সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সকল দলের সঙ্গে সমতা ও ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব— যা প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

এনসিপি কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে— কোন নীতিমালা বা আইনি ভিত্তিতে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা ‘লাল শাপলা’ প্রতীক তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যদি এমন কোনো নীতিমালা না থাকে, তবে তা অবিলম্বে প্রণয়ন ও প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে।

দলটি আরও উল্লেখ করেছে, ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮’-এর বিধি ৭(২) ও ফরম–২ অনুসারে ইসিকে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে, যেখানে রাজনৈতিক দলের প্রার্থিত প্রতীকের নাম উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। এই বিধান লঙ্ঘন করে কমিশনের পক্ষে নিজের ইচ্ছেমতো প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

চিঠিতে এনসিপি চার দফা দাবি তুলে ধরে—

  • কমিশন প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে তার নীতিমালা ও আইনি ভিত্তি লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দেবে।
  • নীতিমালা না থাকলে তা অবিলম্বে প্রণয়ন ও প্রকাশ করতে হবে।
  • ২০০৮ সালের বিধিমালার ফরম–২ অনুযায়ী এনসিপির প্রার্থিত প্রতীকের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
  • প্রতীক বরাদ্দে যুক্তিসংগত, স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করতে হবে।

এনসিপি আরও জানায়, শাপলা প্রতীককে কেন্দ্র করে দেশের জনগণের সঙ্গে তাদের আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে— তাই অন্য কোনো প্রতীক গ্রহণ করা সম্ভব নয়। ইসির আচরণ দলটির প্রতি বৈরী ও স্বেচ্ছাচারী বলেও অভিযোগ করেছে তারা।

চিঠিতে বলা হয়, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিবাদী আমলের পাতানো নির্বাচনী কমিশনের আচরণ থেকে নিজেকে আলাদা করতে পারছে না। এনসিপির প্রতি বৈরী আচরণ কমিশনের সদিচ্ছা, সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।’

দলটি কমিশনের কাছে তাদের পূর্বের তিনটি দরখাস্ত নিষ্পত্তিরও দাবি জানিয়েছে এবং ২০০৮ সালের বিধিমালার বিধি ৯(১) সংশোধন করে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা— এই তিনটির মধ্যে যেকোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ করেছে।

সারাবাংলা/এনএল/এমপি
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর