ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল ধারণাই হলো নির্দলীয়তা। তাই প্রশাসনে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা উপদেষ্টা থাকতে পারে না।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময় যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন, ফ্যাসিস্ট শাসন টিকিয়ে রাখতে বেআইনি কর্মকাণ্ড করেছেন, তাদের প্রশাসনে রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
রিজভী আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরের নানা অনিয়ম, নির্যাতন ও দমননীতিতে যেসব কর্মকর্তা প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে সহযোগিতা করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপ নেবে, তখন তা হতে হবে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয়। তবেই বিগত ১৬ বছর ভোটাধিকার হারানো জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।’
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। যারা অপরাধী তাদের বিচার হওয়া উচিত, তবে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যেন না থাকে। আদালতের কাছে প্রমাণিত হলে তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে—আইনের চোখে সবাই সমান।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “‘জুলাই সনদ’ বা জুলাই মাসে গৃহীত জাতীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি এখন সর্বজনীন। দেশে চরম দলীয়করণের ফলে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাই বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করতেন ক্ষমতা চিরস্থায়ী, কিন্তু ৫ আগস্টের পর বাস্তবতা বদলেছে, যদিও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়।”
পরিবেশ রক্ষায় বিএনপির উদ্যোগের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন— বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ২৫ কোটি বৃক্ষরোপণ করা হবে। দেশের পরিবেশ ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় আমরা কাজ করব।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসনে যদি দলীয় লোকজন থেকে যায়, তাহলে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে থাকতে হবে নির্দলীয় কর্মকর্তাদের।’