ঢাকা: জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে মতৈক্যে পৌঁছাতে আলোচনা শুরু করার জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে ডা. তাহের জানান, বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। মির্জা ফখরুল জানিয়েছেন, তিনি দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
এর আগে দুপুরে পুরানা পল্টন মোড়ে এক সমাবেশে ডা. তাহের বলেন, “আমি সকালে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে ফোন করেছিলাম, পাইনি। এই প্রোগ্রামের পর আবার ফোন করব। তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করব— বিএনপি যেন দ্রুত আলোচনায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।”
তিনি আরও বলেন, “আর রাজনৈতিক হিংসা নয়, আর একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই নয়। এখন সময় জাতীয় ঐকমত্যের। বড় দলগুলোকে বসতে হবে— শুধু জুলাই সনদ নয়, নির্বাচন কীভাবে হবে, ভোটকেন্দ্র কীভাবে নিরাপদ থাকবে— এসব নিয়েও ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। টেলিভিশনে জাতির সামনে সবাইকে ওয়াদা করতে হবে— কোনো দল কেন্দ্র দখল করবে না; করলে সেই আসনের নির্বাচন বাতিল হবে।”
তাহের বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকেও জাতির সামনে বলতে হবে— কোনো নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু ভোট না হলে পুরো নির্বাচন বাতিল করা হবে। কারণ, ৫৪ বছরে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন পাইনি। এবার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ আবার অন্ধকারে চলে যাবে, শেখ হাসিনার যুগে ফিরে যাবে।”
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রস্তাব জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে বিএনপি তাতে আপত্তি জানায়— কারণ, তাদের দাবি অনুযায়ী প্রস্তাবের তফসিলে স্বাক্ষরিত সনদের সঙ্গে নানা অসংগতি রয়েছে। এছাড়া গণভোটের সময় নিয়েও বিএনপি ও জামায়াতের অবস্থান ভিন্ন।
বিএনপি সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট চায়, অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি সমমনা দল আগে গণভোট করে সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে চায়।
এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ সভায় বলা হয়েছে— এক সপ্তাহের মধ্যে দলগুলো ঐকমত্যে না পৌঁছালে সরকার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে।