ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনাকে দেশের কিছু আলেম–ওলামার পক্ষ থেকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেওয়া তাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছিল।
শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে আইডিইবি’র মাল্টিপারপাস হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘১৫–১৬ বছর আমরা দেখেছি ফ্যাসিস্ট হাসিনা কীভাবে মানুষের ভোটাধিকার থেকে শুরু করে ধর্ম পালন পর্যন্ত সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারপরও দাবি করেছে তারা ইসলামের পক্ষে কাজ করেছে। কিন্তু আরও বড় কষ্ট লাগে যখন দেখি, আমাদের দেশের আলেম–ওলামারা তার সঙ্গে বৈঠক করে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিচ্ছেন।”
সরকারি প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শক্তি গত দেড় যুগে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে দলীয় লোক বসালে সেটি কখনোই সঠিকভাবে চলতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দানবীয় শাসনামলে বহু আলেম–ওলামা অন্যায়ভাবে জেল–জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আমরা যারা গণতন্ত্রের আন্দোলন করেছি, তারাও একই পরিণতি ভোগ করেছি। তবুও দেশের তরুণরা জীবন দিয়ে পরিবর্তন এনেছে— এ পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন যে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত পিআর ভোট পদ্ধতির সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “মানুষ ‘ওয়ান ম্যান ওয়ান ভোট’ বোঝে। এখন গণভোটের ব্যালটে চারটি প্রশ্ন দিলে সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবে? শেষদিন পর্যন্তও বুঝতে পারবে না।”
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “একটি মহল গত ১০ বছরে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা রাখেনি। অথচ আমরা গুম, হত্যা, হাজারো মিথ্যা মামলা মোকাবিলা করে লড়াই করেছি। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছিল, ২০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, বহু নেতা গুম হয়েছেন—এ লড়াই আমরা সামনাসামনি করেছি।”
ধর্মকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ব্যবহার করা ইসলাম সমর্থন করে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবী ও গণতন্ত্রকামী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।