ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ এখন আর কোনো ষড়যন্ত্রের পথ খুলে দেবে না। নির্বাচনের বিরুদ্ধে যে ধরনের ষড়যন্ত্রই হোক—জনগণের শক্তির কাছে তা ব্যর্থ হবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপির ৭ দিনব্যাপী ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক আলোচনা সভার তৃতীয় দিনের অধিবেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে প্রশ্ন করা হয়েছিল—আগামী নির্বাচনে কোন দল সবচেয়ে বেশি আসন পেতে পারে?— উত্তরে ৬৬ শতাংশ বলেছেন বিএনপি, ২৬ শতাংশ বলেছেন জামায়াতে ইসলামীর কথা। অন্যান্য কোনো দলই এক শতাংশও ছুঁতে পারেনি বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই ফলাফল দেখে কেউ কেউ হতাশ হতে পারে, আর তখনই তারা ষড়যন্ত্রের পথ খুঁজবে। কিন্তু জনগণ এরইমধ্যে মনস্থির করে ফেলেছে—তারা কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা এক দফা আন্দোলনের বড় অংশ অর্জন করেছি—ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। বাকি অংশটি অর্জনের লক্ষ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে।’
জনগণের শক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ১৫ বছর পর এক নিপীড়নকারী সরকারকে সরিয়ে দিয়েছে। এখন তাদের ভয় দেখিয়ে বা ষড়যন্ত্র করে দমানো যাবে না।’
দেশে ‘বিকৃত উন্নয়ন’ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বড় বড় দালান, এক্সপ্রেসওয়ে, ট্রেন—এসব দৃশ্যমান উন্নয়ন আছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ হয়নি। কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে, অথচ লাখো মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। এটাকে উন্নয়ন বলা যায় না।”
একজন রাজনীতিকের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এক দেশে যদি মানুষ বুভুক্ষ, বেকার, দরিদ্র থাকে; তাহলে বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণ গোরস্থানে আলোকসজ্জার মতো—বাইরেটা আলোকিত, কিন্তু ভেতরটা অন্ধকার।’
বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ পরই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করবেন। শিক্ষার উন্নয়ন করব কীভাবে? কর্মসংস্থান সৃষ্টি করব কীভাবে? নারীর অধিকার ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করব কীভাবে?—এসবের রূপরেখা আজ তুলে ধরা হবে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। এছাড়া জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন। তিনি বিএনপির ভবিষ্যৎ শাসন পরিকল্পনা, দুর্নীতি দমন কৌশল, কর্মসংস্থান সৃষ্টির রূপরেখা এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের দিকনির্দেশনা দেবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।