কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু বলেছেন, বিভিন্ন ভাবে শুনছি ইয়াছিন ভাইয়ের সমর্থকরা বলছেন তারা আজ নমিনেশন আনছেন, কাল নমিনেশন আনছেন, এসব দেখে আমি আর সহ্য করতে না পেরে আবেগে পড়ে মনোনয়নপত্র কিনেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘মনোনয়নপত্র কেনাটা আমার ভুল হয়েছে। আমি এই মনোনয়নপত্র জমা দিব না এবং ইলেকশনও করব না। তবে, দল যদি ইয়াছিন সাহেবকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমিও ইলেকশন করব।’
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ বাসভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে এমন ঘোষণা দেন তিনি।
মনিরুল হক সাক্কু সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘ইয়াছিন সাহেব সবসময় আমার কার্যক্রকে বাধা দিয়েছে। সবসময় তিনি আমার বিপরীতে ছিলেন। তাই হাজী ইয়াছিন সাহেবকে নমিনেশন দিলে আমি স্বতন্ত্র থেকে হলেও নির্বাচন করব। হাজী ইয়াছিন সাহেব ছাড়া আর যাকেই নমিনেশন দিক, আমি তার পক্ষে কাজ করব। তাই আমি বিএনপির মহাসচিব সাহেবকে বলেছিলাম ভাই আমাকে যদি দেন তবে দিতে পারেন। আর যদি না দেন, তাহলে আমার দৃষ্টিতে মনিরুল হক চৌধুরী সাহেবকে দিলে ভাল হবে। আমি ওনাকে আরও বলেছি, যদি আমার কথা রাখেন তাহলে আমি যেভাবে ইলেকশন করতাম, সেভাবেই ওনাকে করিয়ে বিজয় নিয়ে আসব। তাই, দলের মহাসচিব আমার কথা রেখেছেন। মনির ভাই মনোনয়ন পেলেন, আর আমি শুরু থেকেই ওনার সঙ্গে কাজ করছি।’
মনোনয়নপত্র নেওয়া প্রসঙ্গে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘আমি দেখলাম যে ইয়াছিন ভাই বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগে গিয়ে নিজে মালা পড়ছেন, আবার মানুষকে মালা পড়িয়ে দিচ্ছেন, এমন একটি উদ্ভট পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। এ ছাড়া, একবার ১২ তারিখ, একবার ১৬ তারিখ আবার ১৮ তারিখ এসব বলে বিভ্রান্তকর পরিস্থিতি তৈরি করছেন। আমার রাগ উঠে যাওয়ায় আমি নমিনেশন পেপার কিনেছি। তবে, এটা কেনার পর আমি বুঝতে পারছি নমিনেশন পেপার কেনাটা আমার ভুল হয়েছে।’
এ সময়, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজের বহিষ্কারাদেশ আদেশ প্রত্যাহার ইস্যু নিয়ে সাক্কু বলেন, ‘আমি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব এবং চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের কাছে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। তখন আমি মহাসচিব সাহেবকে বলেছিলাম আপনার দল তো ক্ষমতায় নেই, আপনি আমাকে মেয়র বানিয়ে দিতে পারবেন। দল যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেখা যাবে। এই দুইটা কথা বলে আমি আইসা পড়ছি। আমি আর কোনো চিঠি দিব না এটার জন্য।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৯ মে দলীয় শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে মনিরুল হক সাক্কুকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়।