।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে নগদ অর্থ রয়েছে মাত্র ৫৫ হাজার টাকা। এছাড়া তার স্ত্রীর নগদ টাকার পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। আর তিনি থাকেনও তার স্ত্রীর বাড়িতে।
এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ওবায়দুল কাদেরের জমা রয়েছে ৮৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪২ টাকা। পাশাপাশি তার স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রয়েছে ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬১১ টাকা।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীর দাখিল করা হলফনামায় এমনটাই উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়কপরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
হলফনামায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বিএ অনার্স।
নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময় দাখিল করা হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গত ১০ বছরে ওবায়দুল কাদের ও তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৫ গুনের বেশি। এই সময়ে তাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা, সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী বিনিয়োগ বেড়েছে। বর্তমানে তার নিজের মোট বাৎসরিক আয় ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৬৫১ টাকা। আর তার উপর নির্ভরশীলদের মোট বাৎসরিক আয় ১০ লাখ ৫৬ হাজার ২১৫ টাকা।
২০১৮ সালের নির্বাচনের জন্য দাখিল করা হলফনামায় ওবায়দুল কাদের মোশারফ হোসেনের বাড়ি, গ্রাম-বড় রাজাপুর, ১ নং ওয়ার্ড, বসুরহাট, পৌরসভা, ডাকঘর বসুরহাট, উপজেরা-কোম্পানিগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালি স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালি-৫ আসন।
অতীতে তার বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারী মামলা দায়ের করা না হলেও তার নামে ১২টি মামলা ছিল। ১২টি মামলার মধ্যে সব কয়টি মামলা থেকে তিনি অব্যহতি পেয়েছেন বলে হলফনামায় জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি জানিয়েছেন, এর মধ্যে ৯টি মামললা আদালত থেকে অব্যাহতির মাধ্যমে নিস্পত্তি করা হয়েছে। বাকি তিনটি মামলা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খারিজ করে দেয়া হয়।
আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হলফনামায় তার পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন বেসরকাররি খাতের চাকরি।
এমপি এবং মন্ত্রী হিসাবে বেতন ভাতার পাশাপাশি বই ও পত্র পত্রিকায় লেখালেখি ওবায়দুল কাদেরের প্রধান আয়ের খাত।
এছাড়াও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে আয় দেখিয়েছেন তিনি। এই খাতে আয় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। একইখাতে তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৪৩৬ টাকা।
ওবায়দুল কাদের হলফনামায় আরও জানিয়েছেন তিনি নিজে কোনও ব্যবসায় জড়িত নন। তার নিজস্ব ব্যবসা থেকে আয়ের জায়গায লেখা হয়েছে প্রযোজ্য নয়।
তবে নির্ভরশীলদের ব্যবসায় আয় দেখানো হয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৬০ টাকা।
শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে আয় নেই।
পেশা বেতন ভাতা ইত্যাদি) থেকে আয় দেখানো হয়েছে ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। অনান্য খাতে (বই লিখে) আয় দেখানো হয় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫১ টাকা।
সম্পদ বিবরণিতে তার নিজের, স্ত্রীর এবং নির্ভরশীলদের অস্থাবর সম্পত্তির উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তার কাছে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ মাত্র ৫৫ হাজার টাকা। স্ত্রীর কাছে রয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। এই পরিবারের কাছে কোনও বৈদেশিক মুদ্রা নেই। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ ৮৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪২ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রয়েছে ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬১১ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরণের সঞ্চয় পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ১ কোটি ২৪ লাখ লাখ ২১ হাজার ২৭৮ টাকা। স্ত্রীর নামে ৫৫ লাখ ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা। ওবায়দুল কাদের ও তার স্ত্রীর নামে দুইটি গাড়ি দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে তার গাড়ির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৭০০০)। অন্যদিকে তার স্ত্রীর গাড়িটি ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-৫০০০ এই গাড়িটি বিক্রি দেখানো হয়েছে। তার নিজের অলংকার রয়েছে (২৫ তোলা স্বর্ণ) ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। স্ত্রীর অলংকারের পরিমাণ ২০ তোলা স্বর্ণ, দাম ১ লাখ টাকা । তার নিজের ব্যবহৃদ মোবাইল ফোন সেটটি উপহার হিসাবে পেয়েছেন। আর স্ত্রীর মোবাইল ফোন সেটের দাম ১২ হাজার টাকা।
ওবায়দুল কাদের তার নিজের আসবাবপত্রের বিপরীতে দেখিয়েছেন ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সামগ্রী। স্ত্রীর আসবারপত্র রয়েছে ১ লাখ টাকার।
তাদের নিজেদের কোনও কৃষি জমি নেই। অকৃষি জমি দেখানো হয়েছে রাজধানীর উত্তিরায় ৫ কাঠা জমি, যার মুল্য ৫০ লাখ ৭৯ হাজার ৬০০ টাকা।
নিজের নামে কোন বাড়ি বা ফ্ল্যাট না থাকলেও তার স্ত্রীর নামে ১ হাজার ৫০ বগৃফুটের একটা ফ্ল্যাট রয়েছে যার মূল্য ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
দায়-দেনা-ঋণ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সারাবাংলা/জিএস/এমএম