‘পুলিশ লাঠিয়াল’ মন্তব্যে ড. কামাল-সিইসি মতবিরোধ, বৈঠক ত্যাগ
২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৪:২৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নির্বাচন কমিশন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষ না করে মাঝপথে বের হয়ে গেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সিইসি কে এম নূরুল হুদার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন তারা।
বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন দ্রুত নির্বাচন কমিশন থেকে চলে যান। পরে মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিইসি’র বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণ করার অভিযোগ আনেন।
মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বৈঠক শুরুর দেড়ঘণ্টার মাথায় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বৈঠক শেষ না করেই বের হয়ে হয়ে যান।
মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিইসি আমাদের কোনো কথাই শোনেন নি। আমরা সারাদেশে পুলিশের হাতে ধরপাকড়, হয়রানির বিষয়ে কথা বলতে চেয়েছি, তিনি তা শোনেননি। তিনি পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করেছেন।’
তবে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফিংয়ে ঐক্যফ্রন্টের অপর নেতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, বৈঠককালে নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ড. কামাল হোসেন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।
তিনি জানান, ড. কামাল হোসেন ‘পুলিশ লাঠিয়াল বাহিনীর মতো আচরণ করছে’ এমন মন্তব্য করলে তার প্রতিবাদ করেন সিইসি। তিনি ড. কামাল হোসেনের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকারের একটি বাহিনীকে নিয়ে তিনি এমন কথা বলতে পারেন না। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই পরে সকলে বৈঠক থেকে বের হয়ে আসেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল প্রার্থীর জন্য ‘সমান সুযোগ’চেয়ে আবারও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে (ইসি) বৈঠক বসেছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
দুপুর ১২টার দিকে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তারা।
আরও পড়ুন: ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে ঐক্যফ্রন্ট
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। ইসি ও সরকার নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। এখন জনগণ সিদ্ধান্ত নেবেন তারা কি করবেন? তিনি বলেন, মির্জা আব্বাস, মঈন খান আফরোজা আব্বাস, মওদুদ আহমেদ, সালাউদ্দিন আহমেদসহ তাদের নেতা কর্মীদের উপর পুলিশের হামলার কথা বললে সিইসি ক্ষেপে যান।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন পুলিশ লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। এই কথার প্রেক্ষিতে সিইসি ক্ষেপে যান। সিইসি পুলিশের পক্ষ হয়ে কথা বলেছেন, এটা হতে পারে না। সিইসির আচরণ ভদ্রোচিত ছিলনা। আমরা তার পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণে সভা বর্জন করে চলে আসছি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, সেনাবাহিনী ইসির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাদের ক্যাম্পে রেখে পুলিশ দিয়ে বিএনপির নেতা কর্মীদের উপর নৃশংসতা চালাচ্ছে। এতে সেনাবাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে।
বৈঠকে আগামী ২৭ ডিসেম্বরের সমাবেশ সম্পর্কে আলোচনা হওয়ার কথা ছিলো। নির্বাচনি প্রচারণায় ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং যেসব নেতাকর্মী আটক হয়েছেন সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে তালিকা দেয়া এবং ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইতেই বৈঠকটি চেয়েছিলেন নেতারা।
ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গণফোরামের প্রেসিডেয়াম সদস্য মোস্তফা মহসিন মন্টু এবং ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সারাবাংলা/জিএস/জেএএম/এমএম