‘গত ১২/১৩ বছরের নির্যাতন বিশ্বে নজিরবিহীন’
২৬ জুন ২০১৯ ২০:৪৭
ঢাকা: বিরোধী দলগুলোর ওপর বর্তমান সরকারের গত ১২/১৩ বছরের নির্যাতন বিশ্বে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে এ সেমিনার আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গত ১২/১৩ বছর ধরে এ দেশে যা চলছে; আমার মনে হয়, সাম্প্রতিককালে বিশ্বে এইভাবে নির্যাতন নজীরবিহীন।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সবদেশে সব সময় ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী ও নিরুঙ্কুশ করার জন্য নির্যাতনকে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমাদের বাংলাদেশে যে চিত্র এখন আমরা দেখছি, আমাদের সকলের কাছে তা অত্যন্ত পরিচিতি একটা চিত্র।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০০৭ সালে ১/১১ সরকার আসার পর যে নির্যাতন শুরু হয়েছে, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিরাজনীতিকরণ, যারা রাজনীতি করছে, তাদেরকে সমাজে হেয় মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা, রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া এবং সেটা ভয় দেখিয়ে, নির্যাতন করে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ সারাবিশ্বে এই নির্যাতনের চিত্র একই রকম। এই নির্যাতন আমরা রাশিয়াতে দেখতে পাই, লিবিয়াতে দেখতে পাই, আফগানিস্তানে দেখতে পাই, আমাদের পাশের রাষ্ট্রগুলোতে দেখতে পাই। অর্থাৎ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য নির্যাতনকে সবাই হাতির হিসেবে গ্রহণ করেছে।’
নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষ চিরকালই স্বোচ্চার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারপরও দুঃখজনকভাবে আমরা পুরোপুরিভাবে নির্যাতনমুক্ত সমাজ বা নির্যাতনমুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হইনি। কারণ, আমরা যারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করি, তারা রাষ্ট্রক্ষমতা নিরুঙ্কুশ করে রাখতে চাই।’
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার ওপর— এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘একদলীয় ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার জন্যই তাকে (বেগম খালেদা জিয়া) আটক রাখা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্যাতন করে, পঙ্গু করে নির্বাসিত করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রচুর ইতিহাস রয়েছে এমন পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার। আর সেটি সম্ভব হয়েছে জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে। আর সেই জন্যই আজকে বড় প্রয়োজন জনগণের ঐক্য। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে পরাজিত করে এই পরিস্থিতির অবসান ঘটানো হবে।’
বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিলারা জামানসহ অন্যরা।
নির্যাতনের শিকার বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ও সমর্থক তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সেমিনারে। সেমিনার শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্যাতিত ব্যক্তি ও পরিবারের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন।
সারাবাংলা/এজেড/একে