স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও দুই মেয়রের পদত্যাগ দাবি ফখরুলের
৩০ জুলাই ২০১৯ ০১:৩৯
ঢাকা: এডিস মশাবাহিত রোগ ‘ডেঙ্গু’ মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও ঢাকার দুই মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২৯ জুলাই ) রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর তিনি এই দাবি জানান।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ডেঙ্গু সারাদেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে। আমরা হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সরকার ডেঙ্গু মোকাবেলায় লেজে গোবরে অবস্থা করে ফেলেছে। সিটি করপোরেশনের মেয়ররা যা বলছেন, বাস্তবতার সাথে তার কোনো মিল নেই। কখনও গুজব বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন, কখনও তারা বলছেন যথাসাধ্য চেষ্টা করেও পেরে উঠছেন না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন মশা নিধন করতে। সুতরাং এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে দুই সিটি মেয়রকে পদত্যাগ করতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরবর্তী বিষয়গুলো মনিটরিং করতে ব্যর্থ হয়েছে, কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। সুতরাং তারও পদত্যাগ দাবি করছি।’
ডেঙ্গু মশা নিধনে সিটি করপোরেশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইসিডিডিআরবি পূর্ব সতর্কবার্তা দিয়েছিল, যে ওষুধগুলো ব্যবহার করছে সেটা কার্যকর নয়। সেসব ওষুধ বাদ দিয়ে নতুন ওষুধ আনতে বলেছিল আইসিডিডিআরবি। দুই সিটি করপোরেশন সেটাকে গুরুত্ব দেয়নি। ইতিমধ্যে তারা ৫০ কোটি টাকার অকার্যকর ওষুধ ব্যবহার করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলোতে কোনো বেড খালি নেই। চিকিৎসক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ অনেকে মারা গেছেন। আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমরও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।’
ডেঙ্গুর বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সারাদেশে লিফলেট বিতরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দলটির সকল অঙ্গসংগঠন এই লিফলেট বিতরণের কাজ করবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা রংপুর-৩ আসনে উপ-নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দায়িত্ব দিয়েছে স্থায়ী কমিটি।
তিনি জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে কৃষকদের বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে সরবারহ, বন্যা কবলিত এলাকায় কৃষকদের কৃষি ঋণ পুরোপুরি মওকুফের দাবি জানানো হয়েছে আজকের বৈঠকে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো সব কিছুতে সরকার বিএনপি ভূত দেখে। তারা সরাসরি বিএনপিকে গুজব ছড়ানোর জন্য দায়ী করে।’
ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন কোনো মতেই বিএনপি সমর্থন করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি ইভিএমে কখনোই জনগণের রায়ের সঠিক প্রতিফলন ঘটবে না এবং জনমতকে ঘুরিয়ে দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমরা ইভিএম পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। নির্বাচন কমিশনকে এই চিন্তা বাদ দিতে বলছি।’
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড, মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সারাবাংলা/এজেড/কেকে