Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না, রাস্তায় নামতে হবে’


২৯ অক্টোবর ২০১৯ ২১:১১

ঢাকা: দলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের মাঠে নামার তাগিদ দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না, রাস্তায় নামতে হবে। আমাদেরকে আন্দোলন করতে হবে। সরকারকে বাধ্য করতে হবে খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দিতে।’

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ৪১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী যুবদল এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে এই দানবকে পরাজিত করতে পারব। সেই দায়িত্বটা যুবদলের, সেই দায়িত্বটা বিএনপির। আজকে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন করতে হবে।’

‘খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তিনি চাইলে আজই বাসায় চলে যেতে পারবেন অথবা যেখান থেকে এসেছেন সেখানে চলে যেতে পারবেন’— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালকের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘গতকাল পিজি হাসপাতালের ডিরেক্টর, যিনি একজন সামরিক কর্মকর্তা, তিনি প্রেস কনফারেন্স করেছেন। তিনি (পিজি ডিরেক্টর) যে কথাটা বলেছেন, সেটার উদ্দেশ্য কী?

‘হায়াত-মউত আল্লাহ’র হাতে’— বিএসএমএমইউ ডিরেক্টরের এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে জানতে চাই, তাদেরকে (বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ) পরিষ্কার করে বলতে হবে যে, তার (খালেদা জিয়ার) শরীরের অবস্থা কী? কারণ, আমরা খুব ভাল করেই জানি তিনি কী অবস্থায় হেঁটে গিয়েছিলেন ওই পিজিতে, সে অবস্থায় তিনি এখন নেই।’

বিজ্ঞাপন

‘তিনি (খালেদা জিয়া) নিজে বিছানা থেকে উঠতে পারেন না, তাকে সাহায্য নিয়ে উঠতে হয়। তিনি নিজে খেতে পারেন না, তাকে চামচ দিয়ে খাইয়ে দিতে হয়। হুইল চেয়ার ছাড়া তিনি নড়তে পারেন না’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

খালেদা জিয়া সম্পর্কে মিথ্যাচার করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার করছে। একজন নেত্রী, যিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, জনগণের সব চেয়ে বড় নেতা তিনি। তার সম্পর্কে মিথ্যাচার করছে, এ জন্য তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই- দেশনেত্রী কোনো মামলায় সাজা পাননি। আপনাদের সাজানো মামলায়, রাজনৈতিক কারণে তাকে আপনারা কারাবন্দি করে রেখেছেন। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি নিজে সিদ্ধান্ত নেবেন, কোথায় তিনি চিকিৎসা নিতে চান। সবার আগে তার যেটা প্রাপ্য, যেটা আইনগতভাবে প্রাপ্য, সেই জামিনের ব্যাপারে আপনারা বাধা দিতে পারবেন না।’

চলমান শুদ্ধি অভিযানকে আইওয়াশ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আইওয়াশ তো বটেই। ছোট-খাট লোকগুলোকে ধরে নিয়ে গিয়ে দেখাচ্ছেন যে, আপনারা শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন। তার মানে আপনারা শুদ্ধ নন, পরিশুদ্ধ নন, সে জন্যই পরিশুদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন পড়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশকে তারা অপবিত্র করে ফেলেছে। এখন ধর্ষণ হচ্ছে, বাবা ছেলেকে মারছে, ছেলে বাবাকে মারছে। লুট হচ্ছে, ডাকাতি হচ্ছে। কোথাও কোনো কিছু বাদ নেই। দুর্নীতি এমন এক জায়াগায় চলে গেছে।’

‘১৯৯৬ সালে বিএনপিও ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল— প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি আমরা নির্বাচন করেছিলাম টু-থার্ড মেজরিটি আনার জন্য। কারণ, টু-থার্ড মেজরিটি ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক বিল পাস করা যাচ্ছিল না। আর আপনারা নির্বাচন করেছেন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।’

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যা বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

খালেদা বিএসএমএমইউ মির্জা ফখরুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর