বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নিতে হবে: বি চৌধুরী
১৫ আগস্ট ২০২০ ১৯:২৩
ঢাকা: বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
শনিবার (১৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিকল্পধারা বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় এক অডিও বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।
বিকল্পধারা বাড্ডার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মহফিল শেষে বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও জীবন নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অলোচনা সভায় দলের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী অডিও এবং মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান এমপি ভিডিওতে বক্তৃতা করেন। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, বিকল্পধারার সহসভাপতি মহসিন চৌধুরী, ওবায়দুর রহমান মৃধা, যুবধারার সভাপতি আসাদুজ্জামন বাচ্চু, যুবধারার সাধারন সম্পাদক মোস্তফা সারোয়ার, বিকল্পধারার শিশুবিষয়ক সম্পাদক নওয়াব বাহাদুর, বিকল্পশ্রমজীবী ধারার সাধারন সম্পাদক আরিফুল হক সুমন, যুবধারার সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শিহাবসহ অনেকে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বি চৌধুরী তার অডিও বক্তৃতায় বলেন, ‘১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নিষ্ঠুরতম অধ্যায় রচিত হয়েছিল। আমাদের জন্য এটি একটি লজ্জাজনক দিন। এদিন স্বাধীনতার অগ্রদূত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিন্তার এবং মুক্তিযুদ্ধের অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। জাতির জন্য এটা ছিল শোকাবহ এক লজ্জাজনক দিন। সুতরাং তার এই মহাপ্রয়াণ দিবসে আমাদের শপথ নিতে হবে বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যারা অস্বীকার করে, তারা বাংলাদেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে, মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে, বাংলাদেশের মানচিত্রকে অস্বীকার করে। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও তিনি স্বাধীনতার দাবি থেকে পিছু হটেননি। সারা পৃথিবীতে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। দেশের মানুষের জন্য তার ভালোবাসা ছিল সীমাহীন।’
বি চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে অমূল্য সম্পদ। এ ভাষণটি অসাধারণ। এটা ইউনেস্কোও স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যারা অস্বীকার করবে, তারা বাংলাদেশকেই অস্বীকার করে। বঙ্গবন্ধুকে যারা শ্রদ্ধ করে না, তারা দেশের মানুষকেও শ্রদ্ধা করে না। তারা মুক্তি সংগ্রামকেও শ্রদ্ধা করে না। বঙ্গবন্ধু বিরুদ্ধবাদীদের প্রতি কখনো ঘৃণা প্রকাশ করতেন না। আমরাও মনে করি ঘৃণা করে কেউ বড় হয় না, আর শ্রদ্ধা করে কেউ ছোট হয় না। বিকল্পধারার এটা বিঘোষিত নীতি।’
অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দেশেপ্রেম মানে মানচিত্রের প্রতি যেমন ভালোবাসা, মানুষের প্রতিও তেমনি ভালোবাসা। এটা অনেক রাজনীতিবিদ বোঝেন না। বঙ্গবন্ধু এটা অন্তর দিয়ে উপলদ্ধি করতেন। দেশের মানুষকে এবং দেশকে সমার্থকভাবে তিনি ভালোবেসেছেন। তার সবচে বড় সাহস দেশপ্রেমের মধ্যে মানুষকে ভালোবাসার মধ্যে। তার সবচেবড় দুর্বলতা সেটাই। এই অসাধারণ দেশপ্রেমিক মানুষটি বাংলাদেশের মানুষের মনে চির জাগরুক হয়ে থাকবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বঙ্গন্ধুর আদর্শ থেকে এক পাও পিছু না হটার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনার মধ্যে অনেকগুণ আছে, যেটা বঙ্গবন্ধুর সাথে মিলে যায়। আমরা আশা করি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে আপনি প্রেরণা পাবেন।’ তিনি বলেন, ‘শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নই শেষ কথা নয়, দেশের দরিদ্র মানুষ যেন সুখে শান্তিতে থাকতে পারে আপনাতে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান এমপি এক ভিডিও বক্তৃতায় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। এই সময়ের মধ্যেই তিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানীদের দোসর তাকে এবং পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার আন্দেলনকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল।’
মেজর (অব.) মান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তৃতায় অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কোনো দলের একক সম্পদ নন, তিনি সমস্ত জাতির সম্পদ। স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্ব অবিসংবাদিত।’