Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এপিইউবির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায় ছাত্রদল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:২৭

ঢাকা: ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি করতে না দেওয়ার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবির) নিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান চায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলে সভাপতি মো. আবু হোরায়রা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। প্রত্যেক নাগরিক তার পছন্দমত রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তার রাজনৈতিক ভাবনার বিস্তার ঘটাতে পারবেন। সংবিধান সেই ক্ষমতা নাগরিককে দিয়েছে৷ সংবিধানের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদে নাগরিকদের এই অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলেছে। সংবিধানের-৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে জনগণের চিন্তা-বিবেক, বাক স্বাধীনতা এবং ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে।’

মো. আবু হোরায়রা বলেন, ‘১৯৯২ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ইউজিসির নীতিমালায়। এই নীতিমালায় ছাত্র সংগঠন করা যাবে না এমন কিছু বলা হয়নি এবং ২০১০ সালে ইউজিসি সেই নীতিমালায় পরিবর্তন আসে, সেখানেও ছাত্র সংগঠন করা যাবে না- এমন কিছু বলা হয়নি। ইউজিসির নীতিমালার ৬ নম্বর ধারার ১০ উপধারায় বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থে ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবে না এবং ৯ নম্বর ধারার ৫ উপধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্জন, চলা-ফেরা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ‘৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ‘৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররাজনীতির গৌরবজ্জল ইতিহাস থাকলেও ক্রিয়াশীল ছাত্ররাজনীতি ধ্বংসের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে এক শ্রেণির নতজানু, প্রভুভক্ত, আত্মকেন্দ্রীক গোষ্ঠী।’

বিজ্ঞাপন

মো. আবুর হোরায়রা বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে অসচেতন হলে, দেশে দুর্নীতি, লুটপাট, ভয়ের সংস্কৃতি, বিচারহীনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির অভাবে দেশ একসময় বিদেশি প্রভু নির্ভর অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসগুলোতে প্রগতিশীল রাজনৈতিক দর্শনের চর্চা না হলে এক ধরনের মৌলবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের উত্থান হওয়ারও ঝুঁকি রয়ে যায়।’

‘বৈশ্বিক রাজনীতিতে টিকে থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে মেধাভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি চর্চার বিকল্প নেই। আর মেধাবী নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উঠে আসতে হবে। তাই দেশের এই বৃহৎ শিক্ষার্থীদের মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং তাদেরকে মূল ধারার নেতৃত্বে যুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের আওতায় ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি অনুমোদিত হয়’- বলেন মো. আবু হোরায়রা।

তিনি বলেন, ‘এরপর ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের তৎকালীন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ১০ সদস্যের কমিটি অনুমোদন করে, যেটি পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর ৬৪৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পরিণত হয়।’

মো. আবু হোরায়রা বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও শিক্ষার্থীবান্ধব রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শিক্ষার ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে ২০১১ সালে এবং ২০১৫ সালে রাজপথে সরব অবস্থানে ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে মাঠে ছিল সংগঠনটি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করা ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার। কোনো প্রতিষ্ঠান সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। জাতি হিসেবে আমাদের যত অর্জন তার প্রতিটিতে ছাত্র রাজনীতি বিশেষ অবদান রেখেছে। রাজনীতি সচেতন হওয়া প্রত্যেকটি মানুষের জন্য জরুরি। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বেশি জরুরি।’

ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আলোচনার বসার আহবান জানিয়ে মো. আবু হোরায়রা বলেন, ‘অন্যথায় এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ আইনি নোটিশ পাঠানো ও রিট করার চিন্তাভাবনা আমাদের আছে।’

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

এপিইউবি ছাত্রদল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর