চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাবন্দি ইসকনের সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন বাতিল করে ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
রোববার (৪ মে) চিন্ময়কে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি চেম্বার জজ আদালতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ঢাকার সুপ্রিম কোর্টের এ শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালতে সকাল থেকে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করে পুলিশ।
এর মধ্যে সকাল ১০টা থেকে আদালত প্রাঙ্গনসহ সংলগ্ন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় চিন্ময়ের জামিন বাতিল করে ফাঁসি এবং ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন উল্লেখ করে নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এছাড়া চিন্ময়ের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় গত ২৬ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার চেয়েও স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এ হত্যার হুকুমদাতা হিসেবে তারা চিন্ময়ের ফাঁসি দাবি করেন। শিক্ষার্থীরা চিন্ময়কে জামিনে মুক্তি দিয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের পথ উন্মুক্ত করা হলে কঠোর আন্দোলনে যাবার হুঁশিয়ারি দেয়।
পরে চেম্বার জজ আদালতে চিন্ময়ের জানিন শুনানি স্থগিতের খবর পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা ফিরে যান।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান ও বিচারপতি আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে ওইদিনই রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ (রোববার) শুনানির দিন নির্ধারণ করেন চেম্বার জজ।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিনঘন্টা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। আইনজীবী সমিতি এ হামলার জন্য ইসকন সদস্য ও সমর্থকদের দায়ী করে।