সাপোর্ট না পেলেও বাজেট হবে বাস্তবসম্মত
বাজেট সহায়তার অর্থ ছাড়ে এডিবি’র প্রতি অর্থ উপদেষ্টার অনুরোধ
৪ মে ২০২৫ ১৯:৩৮ | আপডেট: ৪ মে ২০২৫ ২১:৩২
ম্যানিলায় এডিবি’র দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াং এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ – ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা: প্রতিশ্রুত বাজেট সহায়তার অর্থ ছাড় করার জন্য এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
রোববার (৪ মে) ম্যানিলায় এডিবি’র দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, এডিবি’র চারদিনব্যাপী (৪-৭ মে) ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ উপলক্ষে অর্থ উপদেষ্টা বর্তমানে ম্যানিলায় রয়েছেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে আমাদের বাজেট সাপোর্টের বিষয়ে তাদের যেটা দেওয়ার কথা ছিল, সেটা ছাড়ের কথা বলেছি। এক্ষেত্রে তারা আইএমএফের বিষয় জিজ্ঞাসা করেছিল। আমরা তাদের বলেছি যে, তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বাজেট সহায়তায় আমরা এডিবিকে তাদের ‘ওসিএফ’ ফান্ড থেকে সহায়তা করতে বলেছি। কিন্তু তারা বলেছে যে, এ ফান্ড লিমিটেড। তবে আমরা এটা দেখবো। এছাড়া একটা বিষয় আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। সেটা হচ্ছে, তাদের সফট ল্যান্ডিয়ের উইন্ডো ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। তবে আমরা এটাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে এডিবি খেয়াল রাখছে। তারা এখন আমাদের অবকাঠামোর উন্নয়নে সহায়তা করছে। এটা তারা করতেই থাকবে। এছাড়া আরও কিছু পাইপলাইনে আছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাত ও এনবিআর এ যে সংস্কারগুলো আছে, সেগুলোতেও তারা সহায়তা করবে।
বাজেট সহায়তায় আইএমএফ’র ঋণ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট নেইনি। বাজেট সাপোর্টের জন্য আমরা কর বাড়াচ্ছি, করের পরিধি বাড়াচ্ছি। বাজেট সাপোর্টের ক্ষেত্রে আইএমএফ মাইক্রো ইকোনমির বিষয়ে জানতে চেয়েছে। এ বিষয় আমরা আলোচনা করছি। আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে। তবে আইএমএফ বলছে- আমরা যে মাইক্রো ইকোনমিকে ভালো করছি, সেটার একটা চিঠি পেলে তারা আশ্বস্ত হতো। আমরা বলেছি যে, আমরা সেটা দেবো। তবে এখনি না, ধীরে-সুস্থে। বাজেট সাপোর্ট নিয়ে যদি আইএমএফ অযৌক্তিক কিছু শর্ত দেয় তাহলে আমরা সেটা দেখবো। আমরা চট করে আইএমএফের কঠিন শর্ত মেনে নিয়ে কিছুই করবো না। আমরা আইএমএফের অর্থ ছাড়াই ভালো করছি।
আইএমএফের ঋণের কিস্তির বিলম্বের বিষয়টি এডিবি’র বাজেট সাপোর্টে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইএমএফ ও এডিবি’র সাপোর্ট না পেলেও ম্যানেজেবল ও বাস্তবসম্মত একটা বাজেট আমরা দেবো। অন্যদিকে দুইটা বাজেট সাপোর্ট মিললেই যে হই হুল্লোড় পড়ে যাবে- বিষয়টা তেমন না। আমাদের মূল ফোকাস হলো বাজেটে খরচ কমানো, দক্ষতা বাড়ানো। আমরা তো ব্যয়ের ব্যাপারে সচেতন। প্রকল্পের বিষয়ও আমরা অনেক সাবধান।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এডিবি’র সন্তোষের কথা উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অর্জন নিয়ে তারা খুশি। এডিবি বলেছে, অন্যান্য দেশের তুলনায় তোমাদের অর্থনীতি ভালো করছে। এক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী। আমরা বলেছি ইকোনমির অবস্থা আগের চেয়েও ‘বেটার’। আমাদের মাইক্রো ইকোনমিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে অনেক সংস্কার করেছি। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আলোচনায় আরও একটা বড় বিষয় ছিল, সেটা হলো ‘ট্রেড’। বাণিজ্য বিষয়ে বেসরকারি খাতে একটি সামিট অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের যে বিনিয়োগ সামিট হয়েছে সেটার প্রশংসা করেছে এডিবি। বেসরকারি খাতের ইনভলমেন্টটা তারা চাচ্ছে। প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগের জন্য ঢাকায় একটা ওয়ার্কশপ আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছে তারা।
সারাবাংলা/আরএস