Monday 05 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মামলার ভয় দেখিয়ে কোটি টাকা চাঁদা দাবি
কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ মে ২০২৫ ১৪:০০ | আপডেট: ৫ মে ২০২৫ ১৪:২৪

কলাবাগান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোক্তারুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাজধানীতে মধ্যরাতে বাসায় ঢুকে ভাঙচুর ও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে কোটি টাকা চাঁদা দাবির করার অভিযোগে কলাবাগান থানার ওসি ও এক এসআইকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন- কলাবাগান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোক্তারুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন।

সোমবার (৫ মে) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, গত ২ মে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড.আব্দুল ওয়াদুদ। পরে গতকাল রোববার অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পুলিশ।

অভিযোগে আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, গত ২৯ এপ্রিল মধ্যরাতে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ও ১৫ থেকে ২০ জনের একদল সন্ত্রাসী বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ টেলিফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি এসে বাড়ির সামনে মেইন রোডে থামে। ম্যানেজার তখন দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তার হোসেন নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। তখন এক ভাড়াটিয়া ও নাইট গার্ড ওই টহল টিমকে বিষয়টি জানাতে চাইলে কলাবাগান থানার ওসি তাদের দুজনকে পুলিশের গাড়িতে তোলার নির্দেশ দেন, যা বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।

জানা গেছে, বাড়ির মধ্যে ঢুকে কয়েকজন পুলিশ ড. আব্দুল ওয়াদুদের ঘরের তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। গভীর রাতে সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও দরজা ভাঙার শব্দে আশপাশের লোকজনদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। একটি দরজা ভাঙার পর দ্বিতীয় দরজা ভাঙার সময় তিনি কলাবাগান থানার ওসিকে সাহায্যের জন্য ফোন দেন। ওই সময় ওসি তাকে পুলিশের সঙ্গে বের হয়ে আসতে বলেন। সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ডিবির লোক এসেছে তাদেরকে সহযোগিতা করতে।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, কোনো উপায় না দেখে পুলিশের সঙ্গে থানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং দরজা খুলে দেই। কিন্তু দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে এসআই বেলাল ও মান্নান আমাকে ধাক্কা মেরে আবার ঘরের ভেতরে টেনে নেয় এবং উগ্রভাবে আমার কাছে কী কী অস্ত্র আছে তা জানতে চায়।

কিছুক্ষণ পর মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে ১ কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায়, কোনো মামলা হয়নি; তারা টাকার জন্য এসেছে। যদি টাকা না দেই তাহলে আমার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা দেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী বলেন, উপায় না পেয়ে দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে তিন জন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়েছে। এমনকি যাওয়ার সময় এসআই বেলাল বাড়িতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এ রকম একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নিয়েছে ভিডিও ধারণ করে।

এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে ডিএমপি তাদের সাময়িক প্রত্যাহার করেন।

সারাবাংলা/জিএস/ইআ

ওসি প্রত্যাহার কলাবাগান থানা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর