সংক্ষিপ্ত রায়ে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হয়— আপিল বিভাগে শিশির মনির
৬ মে ২০২৫ ১২:৩৮ | আপডেট: ৬ মে ২০২৫ ১২:৪১
ঢাকা: জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে রিভিউয়ের এক সংক্ষিপ্ত রায়ে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল। আপিল বিভাগকে এমনটিই জানিয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া তখনকার সব বিচার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে শুনানির সময় তিনি এ কথা বলেন।
শিশির মনির বলেন, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। কারণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল। নির্বাচনের আগে ফাঁসি দিতে হবে এজন্যই এটা করা হয়।
তিনি বলেন, রিভিউ খারিজের সময় কারণ লিখে ফাঁসি দিতে হতো। কিন্তু সংক্ষিপ্ত রায়ে কী কারণে রিভিউ খারিজ করা হলো তা লেখা ছিল না। সংক্ষিপ্ত রায় সাধারণত আসামিকে কারাগার থেকে বের করার সময় করা হয়। এমন সংক্ষিপ্ত রায়ে উপমহাদেশে কারো ফাঁসি হয়েছে বলে কোনো নজির নেই। ৫০ বছরের আইন পেশায়ও এ ধরনের কিছু দেখেননি।
এদিন সকাল ১০টায় জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে শুনানি শুরু হয়। আদালতে আজহারের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। সঙ্গে রয়েছেন ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
আদালতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল উপস্থিত রয়েছেন।
এর আগে, ২২ এপ্রিল শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করের আদালত। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারকে আপিলের অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান এটিএম আজহার। এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
ওই দিন আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী (প্রয়াত) খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন (প্রয়াত) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের রিভিউ চেয়ে একই বছরের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে সংশ্লিষ্ট আবেদন করেছিলেন এই জামায়াত নেতা। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার ওই আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
সারাবাংলা/আরএম/ইআ